সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “গালওয়ান সংঘর্ষ কেন হয়েছিল তার ব্যাখ্যা এখনও চিন দেয়নি। ওরা কখন কী করবে তা বোঝা দায়।” বিশ্বমঞ্চ থেকে এইভাবেই বেজিংকে তোপ দাগলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ‘অত্যন্ত অস্বাভাবিক’ বলেও ব্যাখ্যা করেন তিনি।
ভারতে নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টারের নেতৃত্বে ‘কাউন্সিল ফর ফরেন রিলেশন’-এর একটি বৈঠকে শ্লেষের সুরে চিন (China) সম্পর্কে মন্তব্য করেন জয়শংকর (S Jaishankar)। তাঁর বক্তব্য, “ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক কোনও দিনই স্বাভাবিক ছিল না। সীমান্তে সব সময় চাপানউতোর চলে। ২০২০ সালে গালওয়ানে অযথাই আমাদের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে ছিল লালফৌজ। আজ পর্যন্ত বেজিংয়ের তরফে সেই নিয়ে কোনও সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। চিন খুবই খামখেয়ালি।” ভারত-চিন সম্পর্ক যে কোনও দিনই যে স্বাভাবিক ছিল না তা স্পষ্ট বিদেশমন্ত্রীর কথায়।
[আরও পড়ুন: চিনের ছক বানচাল! ভারতের পাশে দাঁড়িয়ে বড় সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কার]
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় (Galwan Valley) মুখোমুখি হয় ভারত (India) ও চিনের ফৌজ। দুপক্ষের জওয়ানরাই লোহার রড ও কাঁটাতার জড়ানো হাতিয়ার নিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা লড়াই করে। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। ১৯৭৫ সালে পর এই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পরেই সীমান্তে কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী। তবে তাতে আঁচ কিছুটা কমলেও উত্তেজনা কমেনি।
বলে রাখা ভালো, গালওয়ান ছাড়াও একাধিক বিষয়ে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়েছে। দক্ষিণ চিন সাগরে লালফৌজের আগ্রাসানের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে আমেরিকা ও ভারত। বাড়তে থাকা উত্তাপের মাঝেই ২৮ আগস্ট নতুন ম্যাপ প্রকাশ করে নয়াদিল্লির সঙ্গে মতোবিরোধ তীব্র করেছে বেজিং। কারণ নিজেদের নতুন মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশকে নিজের বলে দাবি করে জিনপিং প্রশাসন। আকসাই চিনও তাদের বলে দাবি করে বেজিং। যার কারণে ভারতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেননি চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, মত বিশ্লেষকদের। ফলে দুদেশের সম্পর্কে জমা বরফ আদৌ কখনও গলবে কি না, তারও কোনও আভাস পাওয়া গেল না জয়শংকরের ব্যাখ্যায়।