সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বৃহত্তর পরিসরে রাজনীতি, কূটনীতির সঙ্গে নানাভাবে পুরাণকে মিলিয়ে মিশিয়ে দেওয়া নতুন কিছু নয়। এর আগে ‘গণেশের মাথা প্লাস্টিক সার্জারি’ কিংবা ‘মহাভারতের সময় ইন্টারনেট চালু থাকা’র পক্ষে মতপ্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতাদেরই। এবার বৈদেশিক কূটনীতিতে (Diplomacy) সর্বকালের সর্বসেরা হিসেবে উঠে এলেন আরেক মহাকাব্যিক চরিত্র। হনুমানই তাঁর কাছে সেরা কূটনীতিক! ইন্দোনেশিয়ায় প্রবাসী ভারতীয়দের এক অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর (S Jaishankar)।
এই মুহূর্তে এশিয়ান-ইন্ডিয়া বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ায় (Indonesia) রয়েছেন জয়শংকর। চলতি সপ্তাহ তিনি ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডেই থাকবেন। শনিবার সেখানে পৌঁছে প্রথম প্রবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী। আর কূটনীতি সম্পর্কে নিজের মতামত রাখতে গিয়ে যা বললেন তিনি, তাতে চক্ষুচড়কগাছ অনেকেরই। বললেন, ”মহাভারত আর রামায়ণের তুলনা করলে আমার মতে, সেরা কূটনীতিক বীর হনুমান (Lord Hanuman)। রামচন্দ্রের দিক থেকেই দেখা যাক ব্যাপারটা। তাঁর নির্দেশে একটা প্রায় অজ্ঞাত স্থানে পৌঁছে গেলেন হনুমান। সেখানে সীতাকে খুঁজে বের করলেন। সেই জায়গায় আবার আগুন লাগিয়ে চলে এলেন। দেখুন, কূটনীতিক দিক থেকে কোথাও এভাবে আগুন লাগানো কখনও আমি সমর্থন করি না। কিন্তু সামগ্রিক পরিস্থিতির বিবেচনায় হনুমানের এই কাজ সর্বৈবভাবে সফল।”
[আরও পড়ুন: ‘মিনি হানিমুন’-এ প্রেমই প্রেম, শ্রুতিকে বিশেষ উপহার স্বর্ণেন্দুর, লিখলেন প্রেমপত্র]
এই সম্মেলনে দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদিরও (PM Narendra Modi) ভূয়সী প্রশংসা করেন বিদেশমন্ত্রী। মোদিকে ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ বলে উল্লেখ করে জয়শংকরের বক্তব্য, ”অনেক বিষয়েই পরিস্থিতি কোন পথে যেতে চলেছে, তা তিনি আগাম বোঝেন। আর সেই অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ করেন। এমন একজন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা রয়েছি, তা সৌভাগ্যজনক বলে মনে করি আমি।”
[আরও পড়ুন: নৈশভোজে মোদি-ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সেলফি, উচ্ছ্বসিত মাধবন, কী শিখলেন দুই রাষ্ট্রনেতার কাছে?]
বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা, তাঁর কাজের নিদর্শন তুলে ধরা বিদেশমন্ত্রীর পক্ষে খুবই স্বাভাবিক এবং সেটাই কর্তব্য। কিন্তু দেশের গৌরব তুলে ধরতে বারবার মহাকাব্যিক চরিত্রকে তুলে ধরা সত্যিই কতটা যথাযথ, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ, ভারত মহান তার আপন গরিমা, ঐতিহ্যে। আজকের বিশ্ব কূটনীতিতেও ভারতের একাধিক পদক্ষেপ প্রশংসিত। বরং যেভাবে হনুমানের প্রসঙ্গ তুলে ভারতের কূটনৈতিক দূরদর্শিতা কিংবা সাফল্যকে তুলে ধরা হচ্ছে, তা আজকের দুনিয়ায় নিতান্তই সেকেলে মনোভাবের পরিচয়, এমনই মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।