সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় (Galwan Valley) ভারত-চিন (India-China) সংঘর্ষের পর থেকেই উত্তপ্ত পূর্ব লাদাখ সীমান্ত। পাশাপাশি অরুণাচল (Arunachal) সীমান্ত নিয়েও উদ্বিগ্ন ভারত। সব মিলিয়ে ভারত-চিন সম্পর্ক কঠিনতম তথা তিক্ত একটি পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, এদিন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর (S Jaishankar)। তাঁর কথায়, দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতির উপরেই নির্ভর করে দুই দেশের সম্পর্কের ভাল-মন্দ।
এদিন মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স ২০২২-এ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সেখানে সরাসরি জানিয়ে দিলেন, চিনের সঙ্গে ভারতের একটি সমস্যা রয়েছে। জয়শংকর বলেন, “গত ৪৫ বছর শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ছিল। সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল ছিল। ১৯৭৫ সালের পর থেকে ভারত-চিন সীমান্তে সেনা সংঘর্ষ বা জওয়ানের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।” বিদেশমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন শান্তি অবস্থা টেকেনি চিনের কারণেই। তিনি বলেন, “চিনের সঙ্গে আমাদের চুক্তি ছিল যে দুই দেশ সামরিক বাহিনীকে সীমান্তে মোতায়েন করবে না। কিন্তু চুক্তি লঙ্ঘন করেছে চিন। মুখে মুখে এটিকে সীমান্ত বলা হয় বটে, তবে এটি আসলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা।”
[আরও পড়ুন: করোনাবিধি নিয়ে উত্তাল কানাডার রাজপথে রণমূর্তি পুলিশের, সরানো হল আন্দোলনকারীদের]
এর পরই জয়শংকর মন্তব্য করেন, “দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে দুই দেশের সম্পর্কের ভাল-মন্দ। ফলে বলাই যায়, চিনের সঙ্গে ভারেতর সম্পর্ক বর্তমানে একটি কঠিনতম তথা তিক্ত পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।”
ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দেন, চিন সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন করাতেই যাবতীয় সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি শুধুমাত্র ভারত-চিনের বিষয় নয়, আন্তর্জাতিক উদ্বেগেরও বিষয়। জয়শংকর বলেন, “যখন একটা বড় দেশ লিখিত প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে, আমি মনে করি তখন সেটি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের বিষয় হয়ে ওঠে।”
[আরও পড়ুন: ঘনাচ্ছে যুদ্ধের মেঘ! রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ইউক্রেনে দুই সেনার মৃত্যু]
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে গালওয়ান সীমান্তে ভারত-চিন সংঘর্ষের পর থেকেই বড়সড় ফাটল ধরেছে দুই দেশের সম্পর্কে। এরপর দুই দেশই অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে এলএসি (LAC)-তে । উত্তেজনা কমাতে উভয়পক্ষে বহুবার আলাপ-আলোচনা হয়েছে। যা এখনও অব্যাহত। তথাপি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রকৃত শান্তি ফেরেনি। উলটে চিন সম্প্রতি প্যাংগং হ্রদের উপরে একটি সেতু বানাতে শুরু করেছে। এই বিষয়ে ভারতের তরফে বলা হয়েছে, দিল্লি আশা করে ভারতের সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেখাবে বেজিং। এই বেআইনি নির্মাণ কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।