সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রেকর্ড গড়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে ফের একবার বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে এস জয়শংকরের কাঁধে। নতুন করে দায়িত্ব পাওয়ার দুসপ্তাহের মধ্যে বন্ধুত্ব কায়েম রাখতে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। রবিবার মরুদেশে পৌঁছেই তিনি পা রাখেন আবু ধাবির সেই বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরে। যার সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জুড়ে রয়েছে ভারতও। তাঁর কথায়, এই উপাসনাস্থল ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বন্ধুত্বের প্রতীক।
আরব দুনিয়ায় উত্তরোত্তর গুরুত্ব বাড়ছে ভারতের। আমিরশাহী, সৌদি আরব, ওমান-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর প্রথম হিন্দু মন্দির বোচাসনবাসী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামীনারায়ণ সংস্থা (বিএপিএস)। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি যার দ্বারোদ্ঘাটন হয়েছিল মোদির হাত ধরে। সেসময় এই মন্দিরের মাধ্যমেই আমিরশাহী ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সেই একই কথাই এদিন শোনা গেল জয়শংকরের গলায়। ঐতিহাসিক এই মন্দির দর্শন করে উচ্ছাসিত তিনি। গোটা মন্দির ঘুরে দেখার পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী কথা বলেন সেখানকার পুরোহিতদের সঙ্গে। মন্দিরের নানা ছবি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জয়শংকর লেখেন, 'আবু ধাবির বিএপিএস মন্দির দর্শন করে আমি ধন্য। এই মন্দির বিশ্বের কাছে ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বন্ধুত্বের বার্তা প্রদান করে। এই মন্দিরই বিশ্ব এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের সেতু হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।'
[আরও পড়ুন: ‘গ্লোবাল জেহাদে’র গ্রাসে রাশিয়া! দাগেস্তান হামলায় হাত ইসলামিক স্টেটের?]
জানা গিয়েছে, দুদেশের সম্পর্ককে আগামিদিনে আরও মজবুত করতে জয়শংকর বৈঠক করেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির বিদেশমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের সঙ্গে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, দুই মন্ত্রীর মধ্যে পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যে ভারতের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই বৈঠকে উঠে এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ও। মনে করা হচ্ছে, চলমান গাজাযুদ্ধ নিয়েও কথা বলে থাকতে পারেন তাঁরা। এই বৈঠকের পর দুদেশের বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে। আগামিদিনে ভারত ও যুক্ত আরব আমিরশাহির কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত হবে ও বিভিন্নক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।
বিশ্লেষকদের মতে, মোদি সরকারের বিদেশনীতি ও ভারতের ক্রমবর্ধন অর্থনীতির কথা মাথায় রেখে এই বাজার ছাড়তে নারাজ আরব দুনিয়া। এদিকে, আমিরশাহীর সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করলেও ইরানের কথা মাথায় রাখতে হবে ভারতকে। কারণ তেহরানের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক বহু পুরনো। বহুবার বিপদে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটি। কিন্তু, সম্প্রতি ইজরায়েল-আমিরশাহী শান্তিচুক্তি নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান। তেহরানের অভিযোগ, ইহুদি দেশটির সঙ্গে শান্তি স্থাপন করে প্যালেস্তিনীয়দের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আমিরশাহী। এর জন্য দেশটিকে হামলার মুখে পড়তে হতে পারে। এহেন পরিস্থিতিতে কীভাবে দুদিক সামাল দেবেন জয়শংকর তা সময়ই বলবে।