সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এসসিও সামিটে যোগ দিতে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলেনে তাঁর দিক বিশেষ নজর সকলের। পাকিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানকেই কী বার্তা দেন তিনি তা নিয়ে উদগ্রীব ছিল ওয়াকিবহাল মহল। তবে সম্মেলনের সকালে হালকা মেজাজে ধরা দেন জয়শংকর। ভারতীয় কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রাতঃভ্রমণে যাওয়ার পাশাপাশি ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাস চত্বরে বৃক্ষরোপণও করেন তিনি।
গত ১৫ ও ১৬ অক্টোবর পাকিস্তানের পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত হয় এসসিও সামিট। প্রথামাফিক পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সব সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদেরই আমন্ত্রণ জানান। গত আগস্ট মাসে আমন্ত্রণপত্র আসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও। কিন্তু দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠে, মোদি কি এই সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাবেন? নানা জল্পনার পর অবশেষে বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক জানায় এসসিও সামিটে যোগ দিতে পাকিস্তানে যাবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকালে ইসলামাবাদে পৌঁছন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। বুধবার সকালে ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাস চত্বরে অন্যান্য কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রাতঃভ্রমণে যান জয়শংকর। তার পর সেখানকার বাগানের একটি জায়গায় অর্জুন গাছের চারা লাগান তিনি।
নিজেই প্রাতঃভ্রমণ ও চারা লাগানোর ছবি এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেন জয়শংকর। তিনি লেখেন,'ভারতীয় হাই কমিশন চত্বরে আমরা প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলাম। #Plant4Mother-এর জন্য একটি অর্জুন গাছের চারাও লাগান হয়েছে। #একটি গাছ মায়ের নামে- এটাই আমাদের উদ্দেশ্য।' প্রসঙ্গত, ৯ বছর পর পাকিস্তানের মাটিতে পা রাখলেন ভারতের কোনও বিদেশমন্ত্রী। এর আগে সুষমা স্বরাজ বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন ২০১৫ সালে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। তার পর থেকে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বলতে সেভাবে কিছুই নেই। তবে মঙ্গলবার রাতে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলেন জয়শংকর।
অন্যদিকে, বুধবার সম্মেলনে ফের সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানকে তোপ দাগেন জয়শংকর। সাফ জানান, "সন্ত্রাসবাদ কখনই দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করে না। যদি সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলতেই থাকে, তবে বাণিজ্য, শক্তির আদানপ্রদান, মানুষে মানুষে সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না। বর্তমান সময়ে সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই আরও বেশি করে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।” বিশ্বায়নের যুগে পারস্পরিক নির্ভরতার প্রসঙ্গ টেনে এসসিও দেশগুলোকে আরও বেশি করে একজোট হওয়ার বার্তা দেন তিনি। জয়শংকরের এই পাক সফর নিয়ে কূটনীতির কারবারিদের ধারণা ছিল, এবার হয়তো দুদেশের মধ্যে আলোচনার পথ প্রশস্ত হবে। কারণ বহুদিন ধরেই ইসলামাবাদের সঙ্গে সমস্ত কূটনৈতিক আলোচনা বন্ধ রেখেছে নয়াদিল্লি। বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। লাগাতার জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে উপত্যকা অশান্ত করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। যার কড়া জবাব দিচ্ছে দিল্লিও। কিন্তু ফের একবার সন্ত্রাসবাদ নিতে ইসলামাবাদকে কড়া বার্তা দিয়েছে দিল্লি।