সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত সোমবার গোটা বিশ্ব শিউরে উঠেছিল দৃশ্যটি দেখে। আকাশে উড়ন্ত বিমান থেকে খসে পড়ছে দু’টি বিন্দু। আসলে দু’জন মানুষ! তালিবানের (Taliban) হাত থেকে বাঁচতে আফগানিস্তান (Afghanistan) ছাড়ার মরিয়া চেষ্টার চরম ট্র্যাজিক পরিণতি দেখে বিষণ্ণ হয়েছিল নেট দুনিয়া। অবশেষে জানা গিয়েছে ওই দু’জনের আসল পরিচয়। দু’জনেই কিশোর। তারা সহোদর। দুই ভাইয়ের এমন পরিণতিতে হাহাকার পরিবার জুড়ে।
প্রসঙ্গত, ওই বিমান থেকে মোট তিনজনকে খসে পড়তে হয়েছিল মৃত্যুর অনিবার্যতায়। রেজা ও কবীর (নাম পরিবর্তিত) তাদেরই অন্যতম। বাড়ির সকলকে লুকিয়েই ঘর ছেড়েছিল তারা। এর পিছনে ছিল প্রতিবেশীদের কাছ থেকে শোনা ভুয়ো খবর। আসলে তালিবানদের কবজায় আরও একবার আফগানিস্তান চলে আসার পর থেকেই দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে নিঃসীম আতঙ্কের রেশ।
[আরও পডুন: ভাঁড়ারে বারুদ আছে, ভাত নেই! তালিবানি রাজত্বে অনাহারের মুখে প্রায় দেড় কোটি আফগান]
তালিবান আসা মানেই ব্যক্তি স্বাধীনতার অবসান। কোনও মতে ধুঁকতে ধুঁকতে বেঁচে থাকা ভয়ের আবহে। এই পরিস্থিতিতে দুই কিশোর জানতে পারে কানাডায় পাঠানো হবে ২০ হাজার জনকে। সেখানেই আশ্রয় পাবেন তাঁরা। স্বস্তিতে বেঁচে থাকার সুযোগ নিতে মরিয়া রেজা ও কবীর তাই বাড়ি থেকে পালিয়েছিল পরিচয়পত্র সঙ্গে করে। তারপর বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারের সঙ্গে নিজেদের বেঁধে ফেলেছিল তারা। জানা ছিল না, বিমান ছাড়লে ভিতরে ঢুকে যাবে সেটি। আর তারপরই নীল আকাশের বুকে মৃত্যুমুখে ভেসে যেতে হবে।
কাবুল বিমানবন্দর থেকে কিছু দূরে মিলেছে পা ও হাত ছিন্ন অবস্থায় রেজার দেহ। এখনও মেলেনি কবীরের দেহাবশেষের সন্ধান। আপাতত তাকেই খুঁজে চলেছে পরিবার। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল। কিন্তু মেলেনি খোঁজ। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ”আমাদের আশা কবীরকে খুঁজে পাব। জীবিত অথবা মৃত। অন্তত তাহলে আমাদের পরিবার একটা সান্ত্বনা পাবে।”