সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের নতুন করে উত্তপ্ত সন্দেশখালি। লাঠি হাতে মহিলাদের মিছিলে বাধা পুলিশের। উর্দিধারীদের সঙ্গে বচসা স্থানীয় মহিলাদের। “এতদিন কোথায় ছিলেন?”, পুলিশকে প্রশ্ন বিক্ষোভকারীদের। সন্দেশখালির ‘বেতাজ বাদশা’ শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার এবং শিবপ্রসাদ হাজরাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি গ্রামবাসীদের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে নামানো হল ব়্যাফ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরে চাষের জমি ও খাল দখল করে একের পর এক ভেড়ি তৈরি করেছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য শিবপ্রসাদ হাজরা এবং সন্দেশখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি উত্তম সর্দার। জমিতে চাষের পর গ্রামবাসীরা তাঁদের প্রাপ্য পাননি। এতদিন শেখ শাহজাহানের ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি বলেও দাবি গ্রামবাসীদের। শেখ শাহজাহান বেপাত্তা হতেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এলাকায় প্রতিবাদ মিছিলের পাশাপাশি শিবপ্রসাদ হাজরার ভেড়ির অফিসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালে থানার উদ্দেশে মিছিল করেন স্থানীয় মহিলারা। মাঝপথে বাধা দেয় পুলিশ। তার জেরে পুলিশ ও উত্তেজিত মহিলাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এদিকে, ঝামেলার আশঙ্কায় সন্দেশখালি বাজারও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: দিল্লির জল বোর্ডের দুর্নীতির টাকা যেত আপের নির্বাচনী তহবিলে, চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির]
উল্লেখ্য, বুধবার বিকেল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বসিরহাটের সন্দেশখালি থানার ত্রিমোহিনী থেকে কাহারপাড়া, দাশপাড়া ও পাত্রপাড়ার মতো একাধিক গ্রাম। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে স্থানীয় তৃণমূলের তরফে সন্দেশখালিতে একটি মিছিল বেরোয়। পালটা মিছিল শুরু করে বিজেপি। আর তখনই উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। একে অপরকে বাঁশ, লাঠি, ইট ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করতে শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে দুই যুবক নদীতে লাফ দেয়। রায়মঙ্গল নদী সাঁতরে একটি লঞ্চে উঠে কোনওরকমে প্রাণরক্ষা করে। স্থানীয়দের দাবি, তাঁরা তৃণমূল কর্মী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত।
সন্দেশখালিতে দুপক্ষের সংঘাতের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বহিরাগতরা গ্রামে ঢুকে মারধর করার অভিযোগে গ্রামবাসীরা সন্দেশখালি থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন। অন্যদিকে, সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরা শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলার অভিযোগে এফআইআর করেন। বুধবারের অশান্তি নিয়ে বসিরহাট জেলা পুলিশের সন্দেশখালি থানা একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। কারণ, ওইদিন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও জখম হন। গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এক তৃণমূল কর্মীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।