আকাশ মিশ্র: অ্যাকশন ভাল! কিন্তু বেশি কি ভাল? হিরোগিরিও ভাল, কিন্তু তা নিয়ে বাড়াবাড়ি কি ভাল? যাঁরা বলিউডের মারকুটে ছবির ফ্যান কিংবা যাঁরা জন আব্রাহামের (John Abraham) অন্ধভক্ত! তাঁদের মতামত ভিন্ন হতেই পারে। কিন্তু কেউ যদি জানতে চান জন আব্রাহামের সদ্য মুক্তি পাওয়া ছবি ‘সত্যমেব জয়তে টু’ (Satyameva Jayate 2 movie review) কেমন? তাহলে বলতে হয়, এই ছবি সিনেপর্দায় কেন, মোবাইলেও দেখা উচিত নয়। কারণ বিপদ ডেকে আনতে পারে! ভাবছেন সিনেমা দেখে বিপদ! ব্যাপারটা একটু খোলসা করেই বলা যাক।
আড়াই ঘণ্টা সময়সীমা। অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে হুঙ্কার। সঙ্গে এক ঘুষিতে টেবিল ভাঙা, এক হাতে তুলে নেওয়া গাড়ি, মন্দিরের ঘণ্টা দিয়ে তুমুল মারধর। আর এসব একাই করছেন জন আব্রাহাম। তবে একা নয়, সঙ্গে আরও দুই জন আব্রাহাম! ভাবছেন এ আবার কেমন কাণ্ড। এখানেই তো ‘সত্যমেব জয়তে টু’ ছবির আসল মারপ্যাচ। এই ছবিতে জন আব্রাহামের ট্রিপল রোল। আর এই ট্রিপল ডোজই মাথা ব্যথার আসল কারণ।
[আরও পড়ুন: Ekannoborti Review: অভিনয়ই একমাত্র প্রাপ্তি, তবুও মন কাড়তে পারল না ‘একান্নবর্তী’]
রাজনীতির দুর্নীতি। দেশের সাধারণ মানুষ খেতে পাচ্ছেন না, চাকরি নেই। অন্যদিকে এক মন্ত্রীর ছেলে একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে। সুবিচারের জন্য় গায়ে আগুনও দেয়। কৃষকেরাও নিজেদের অধিকার চাইতে এগিয়ে আসে। মোটামুটি গত দশ বছরে দেশের অন্দরে ঘটে চলা যাবতীয় ইস্যুকে ছবির চিত্রনাট্যে টেনে নিয়ে আসেন পরিচালক মিলাপ মিলান জাভেরি। যার ফলাফল, পুরোটাই ঘেঁটে ঘ। অতি নাটকীয় দৃশ্য, অতিনাটকীয় সংলাপে ছবি আপনাকে টেনে নিয়ে যাবে আশির দশকে।
‘সত্যমেব জয়তে টু’ ছবির নির্মাণে পরিচালক পুরোটাই যেন অনুসরণ করেছেন আশির দশকের বলিউড মশালা ছবিকে। যেখানে ভারী ভারী সংলাপ দেশভক্তির জন্ম দেয়। শুধু তাই নয়, অ্যাকশনের স্টাইলও সেই আশির দশকের মতোই। তাই এই ছবি দেখলে মনে হবে পুরনো ছবি আবার হয়তো মুক্তি পেয়েছে।
এই ছবির সবচেয়ে দুর্বল জায়গাই হল জন আব্রাহাম। তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেও জমাতে পারলেন না ছবি। আসলে, দুর্বল চিত্রনাট্যের মুখে পড়ে জনও হারিয়ে ফেলেছিলেন অভিনয়ের ক্ষমতা। আর তাই তো শুধুই চিৎকার, পেশি ফোলানোতেই আটকে রইলেন জন।
‘সত্যমেব জয়তে’ প্রথম ছবির গল্পের সঙ্গে কোনও মিল নেই দ্বিতীয় ছবির। বরং প্রথম ছবিটি বসে দেখা গেলেও, দ্বিতীয়টি একেবারেই নয়। তাহলে কি ‘সত্যমেব জয়তে টু’ ছবিতে কিছুই ভাল নেই? রয়েছে। এই ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফি কিছুটা হলেও ইন্টারেস্ট তৈরি করবে। যেভাবে অ্যাকশন দৃশ্যগুলো শুট হয়েছে, তা দেখতে ভাল লাগে। এর জন্য, বাহবা দিতে হয় সিনেম্যাটোগ্রাফার ডুডলেকে। এছাড়া এই ছবিতে এমন কিছু নেই, যা মনে রাখার মতো।