দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে শেষ পর্যন্ত রাইটারের মাধ্যমে টেট পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ হল এরশাদ করিমের। গোঘাটের কামারপুকুরের বাসিন্দা এরশাদ করিম জন্মের পর থেকেই দৃষ্টিহীন। লেখাপড়ায় অত্যন্ত মেধাবী এরশাদ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Rabindra Bharati University) থেকে বাংলায় এমএ পাস করার পর বর্তমানে বিএড পড়ছেন।
ছোট থেকেই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন তাঁর। পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলেও প্রতিবন্ধকতা তাঁর দৃষ্টিহীনতা। পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী কোনও দৃষ্টিহীন পরীক্ষার্থীকে রাইটার হিসাবে তিনি সাহায্য করতে পারবেন যিনি এখনও পর্যন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেননি। পরীক্ষায় বসার জন্য অ্যাডমিট কার্ড হাতে এসে পৌঁছলেও রাইটার খুঁজতে খুঁজতে হতাশ হয়ে পড়ে এরশাদ। শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়াই (Social Media) এরশাদকে রাইটার খুঁজে দেয়।
এরশাদেরই এক বন্ধু সোশ্যাল মিডিয়ার রাইটারের খোঁজে পোস্ট করে। আর এই পোস্ট দেখেই মুসলিম দাদাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন হিন্দু বোন সায়নী দাস। ত্রিবেণীর বিধানচন্দ্র রায় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সায়নীর জীবনে আর কিছুদিন বাদেই প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। রাইটারের অভাবে এক দৃষ্টিহীন দাদা পরীক্ষা দিতে পারবে না এটা ভেবে সায়নী তার বাবার মাধ্যমে ফোন করে দৃষ্টিহীন দাদার সঙ্গে কথা বলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।
রবিবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই সায়নী তার দাদা এরশাদকে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র হুগলি উইমেন্স কলেজে পৌঁছে যায়। একজন দৃষ্টিহীন দাদার রাইটার হতে পেরে রীতিমতো খুশি সায়নী। সে জানায়, দাদার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। কীভাবে উত্তরপত্র পূরণ করতে হবে তা তাকে বলে দিয়েছে। সেও তার দাদাকে প্রশ্ন ও উত্তরের অপশনগুলি বলে দেবে। দাদা সেই উত্তরের অপশন বলে দেওয়ার পর সেই উত্তরের ঘর পূরণ করে দেবে। দাদা এরশাদ জানায়, বোনের এই সাহায্য তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে সাহায্য করেছে। সে মনে করে, এই বোন তার পাশে দাঁড়ানোয় তার এই পরিশ্রম বিফলে যাবে না।