সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গরুপাচার কাণ্ডের তদন্তে দিন দুই আগে কলকাতার বিভিন্ন জায়গা তল্লাশি চালিয়ে অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের নাগাল পেয়েছে সিবিআই (CBI)। শুক্রবার ভোরে দিল্লি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে শনিবার কলকাতায় আনা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। আর এ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিলেন বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu)। তাঁর শ্লেষ, ”কোন শিল্পে অরাজকতা নেই বলুন তো? সকাল-বিকেল এখন সিবিআই তল্লাশি করে হাতেনাতে ধরছে এখানকার গরু পাচারকারী ও কয়লা পাচাকারীদের। আর তাদের হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কান্নাকাটি করেন, ত্রাহি ত্রাহি রব করেন, কেন?”
অমিত শাহর রাজ্য সফর চলাকালীন বৃহস্পতিবার কলকাতা এবং আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালায় দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা – সিবিআই ও আয়কর দপ্তর। গরু পাচারে অভিযুক্ত প্রাক্তন বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের সল্টলেকের বাড়িতেও চলে অভিযান। এছাড়া সিআরপিএফকে সঙ্গে নিয়ে আসানসোলের বিভিন্ন জায়গায় কয়লা ব্যবসায়ীদের বাড়ি ও অফিসে হানা দেন আয়কর দপ্তরের কর্তারা। রাজ্য পুলিশকে না জানিয়ে আচমকা কেন্দ্রীয় সংস্থার এই অভিযানকে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়। মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)নিজে এ নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছিলেন।
[আরও পড়ুন: অমিত শাহ চলে যেতেই আক্রান্ত বিজেপি যুবকর্মীরা, কাঁচড়াপাড়ায় কাঠগড়ায় তৃণমূল]
তবে পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, সল্টলেকে সতীশ কুমারের বাড়িতে তল্লাশির সূত্র ধরেই হদিশ মেলে গরু পাচারে অভিযুক্ত অন্যতম মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হক। দিল্লি থেকে শুক্রবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। এর গ্রেপ্তারি নিয়ে শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহ নিজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, ”ওই ব্যক্তির সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী সম্পর্ক? উনি কেন বাঁচাতে চাইছেন?” এরপর সায়ন্তন বসুর এই মন্তব্য আজ। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির জল যে বেশ খানিকটা গড়িয়েছে, তা স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: প্রায় ৮ মাস বন্ধ লোকাল ট্রেন, পুরনো মান্থলি নিয়ে নিত্যযাত্রীদের সুখবর শোনাল রেল]
মুর্শিদাবাদ লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার করেই আর্থিক প্রতিপত্তি বাড়িয়েছে এনামুল। এই চক্রে তার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আরও অনেকেই। সিবিআই সূত্রে খবর, বছর দুই আগে একবার এনামুলকে এই অপরাধে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে সে জামিন পায়। শুক্রবার ফের গ্রেপ্তার। তার সূত্র ধরে মুর্শিদাবাদ ও বসিরহাটের সীমান্ত অঞ্চলে আজ তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআইয়ের একটি টিম। সূত্রের খবর, নজরে রয়েছে বসিরহাটের এক ব্যবসায়ী। অর্থাৎ সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান চক্রটি যথেষ্ট সক্রিয় বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।