সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৯৮ সালে মুক্তি পাওয়া হলিউডের ব্লকবাস্টার ‘আর্মাগেডন’ ছবিটির কথা কে না জানে। সেই ছবিতে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা টেক্সাস শহরের আকারের একটি অতিকায় গ্রহাণুর (Asteroid) কবল থেকে সভ্যতাকে বাঁচাতে NASA একটি মহাকাশযানের ধাক্কায় সেটিকে উড়িয়ে দিয়েছিল। এবার আর রুপোলি পর্দায় নয়, বাস্তবেই এমন কাণ্ড ঘটাল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। নাসার কর্তা বিল নেলসন বলছেন, ”সায়েন্স ফিকশন থেকে সায়েন্স ফ্যাক্টের পথে হেঁটে পৃথিবীকে রক্ষা করার একটি উপায় পরখ করা হল।”
ঠিক কী ঘটিয়েছে নাসা? একটি ছোট কিন্তু শক্তিশালী মহাকাশযানের সাহায্যে মহাকাশে ধাক্কা দেওয়া হল একটি গ্রহাণুকে। মঙ্গলবার পরীক্ষামূলক ভাবে এই অভিযান চালানো হল। ভবিষ্যতে যাতে কোনও অতিকায় গ্রহাণুর পৃথিবীর উপরে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হলে সেটিকে প্রতিহত করা যায়, তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নাসার। এই মিশনের নাম ডার্ট মিশন।
[আরও পড়ুন: জেফ বেজোসের সঙ্গে টক্কর, বিশ্বের ধনী তালিকায় তিন নম্বরে নেমে গেলেন আদানি]
২০২১ সালের নভেম্বরে এই মিশনটির সূচনা হয়। লক্ষ্য ছিল পৃথিবী থেকে ৯০ লক্ষ কিলোমিটার দূরের গ্রহাণুতে আঘাত হানা। ওই মহাকাশযানে একটি ক্যামেরাও রয়েছে। যানটি কেবল স্বয়ংক্রিয় ভাবে ১৬০ কিমি চওড়া ডাইমেরফস নামের গ্রহাণুটিকে শনাক্ত করেছে তাই নয়, শেষ পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছে সেটিকে লক্ষ্য করেও। এরপর গ্রহাণুটির শরীরে সেটি আছড়ে পড়ে ধ্বংসও হয়ে গিয়েছে। তবে এই সংঘর্ষের ফলে ছোট ওই মহাকাশযানের ধাক্কায় গ্রহাণু ডাইমরফোসের গতিপথ কতটা পালটানো গিয়েছে, এবার সেটাই খতিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা।
প্রাগৈতিহাসিক যুগে পৃথিবীর বুক থেকে বিলীন হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসররা। তাদের অবলুপ্তির কারণ ছিল অতিকায় গ্রহাণুর আছড়ে পড়া। যা মানব সভ্যতার কাছেও এক অশনি সংকেত। ভবিষ্যতে কখনও যে এই ধরনের কোনও গ্রহাণু এই গ্রহে আছড়ে পড়ে মানুষকেও নিশ্চিহ্ন করে দেবে কিনা সেই আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে। এর হাত থেকে বাঁচতে শুরু হয়েছে নাসার পরীক্ষা। এদিনের সাফল্য যে ভরসা জোগাচ্ছে তা বলাই যায়।