সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাবিশ্বে এখন ঘটনার ঘনঘটা। কখনও পৃথিবীর কান ঘেঁষে ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছে গ্রহাণু। কখনও আবার ধূমকেতুর পুচ্ছ ছুঁয়ে যায় নীলগ্রহকে। সেসবের বিপদও কিছু কম নয়। এবার গ্রহাণু এবং একাধিক মহাকাশ বর্জ্যকে 'বন্দি' করার পরিকল্পনা করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার এক সংস্থা। সঙ্গী নাসা ও ইউএস স্পেস ফোর্স। তার জন্য নয়া প্রযুক্তিও খুঁজে বের করেছেন তাঁরা। এই উদ্যোগ মহাকাশের যানজট কমাতে যেমন সাহায্য করবে, তেমনই গ্রহাণুর টুকরো হাতে পাওয়ায় তা নিয়ে গবেষণাও সহজ হবে। এছাড়া সেখান থেকে যথাযথ পদ্ধতিতে খননকাজ করে মূল্যবান সব ধাতুও সংগ্রহ করা সম্ভব। এমনই জানিয়েছেন গবেষকরা।
ঠিক কী করতে চাইছে ক্যালিফোর্নিয়ার সংস্থা ট্রান্স-অ্যাস্ট্রা? বলা হচ্ছে, মহাকাশে ভাসিয়ে দেওয়া হবে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ফোলা একটা বড়সড় ব্যাগ। তা ভাসতে ভাসতে মহাকাশের বর্জ্য বন্দি করবে। বিশেষত পৃথিবীর গ্রহাণুর টুকরোকে বাগে এনে পৃথিবীতে ফেরানোই মূল লক্ষ্য। সেখান থেকে যথাযথ পদ্ধতিতে খনন করে পাওয়া ধাতব পদার্থের সংকট মিটবে বলে মনে করা হচ্ছে। ব্যাগটির ধারণ ক্ষমতা ১০ হাজার টন গ্রহাণুর খণ্ডাংশ। সব কাজ ঠিকমতো হলে ২০২৮ সাল থেকে এই সংগৃহীত গ্রহাণু থেকে খনিজ পদার্থ বের করার কাজ শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে ট্রান্স-অ্যাস্ট্রা সূত্রে। এর জন্য তাদের তরফে ১২ মিলিয়ন ও নাসা ১৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছে।
এর নেপথ্যে প্রযুক্তি কী? তাও বিশদে জানিয়েছে নির্মাণ সংস্থা। 'ব্যাগ'টি এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যাতে তা পরিস্থিতি সাপেক্ষে নিজেকে সংকুচিত-প্রসারিত করতে পারে। কোনও গ্রহাণু বা মহাকাশের কোনও বর্জ্য আশেপাশে ভ্রাম্যমাণ অবস্থায় থাকলে 'ব্যাগ' ধীরে ধীরে প্রসারিত হয়ে ওই বস্তুকে ঝুলিতে টেনে নেবে। তারপরল আবার সংকুচিত হয়ে যাবে। তাতে ওই বস্তুটি বন্দি অবস্থায় থেকে যাবে তার মধ্যেই। তবে এই কাজে কিছুটা ঝুঁকি আছে। মহাকাশে ভাসমান যে কোনও বস্তুকে টেনে নেওয়ার আগে বুঝতে হবে, তা বিপজ্জনক কি না। যেমন কোনও স্যাটেলাইটের ভেঙে পড়া অংশ খসে পড়ার আগে শূন্যে ভেসে বেড়ায়। তবে তা বিপজ্জনক বর্জ্য। তাই ট্রান্স-অ্যাস্ট্রার তৈরি 'ব্যাগে' তার জায়গা হবে না। যদিও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এই পদ্ধতিতে মহাকাশের অধিকাংশ বর্জ্য সাফ হওয়া সম্ভব।
