সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: জিনাতকে বাগে এনে সুন্দরবনের বিট অফিসার মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসকে পুরস্কৃত করল কেন্দ্রীয় সরকার। আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসে মঙ্গলবার ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি দিল্লির ন্যাশনাল জুওলজিক্যাল পার্কে একটি অনুষ্ঠানে বাংলার ওই বনদপ্তরের আধিকারিকের হাতে 'ওয়াইল্ডলাইফ প্রটেকশন অ্যান্ড এন্টি-পোচিং অ্যাক্টিভিটিস' সম্মানে শংসাপত্র প্রদান করা হয়। ওই শংসাপত্র ছাড়াও এই পুরস্কার হিসাবে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন কেন্দ্রের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সুন্দরবনের ওই বিট আধিকারিককে আগেই পুরস্কৃত করেছিল রাজ্যের বনবিভাগ। এবার তাঁকে কেন্দ্র সম্মান দেওয়ায় বন্যপ্রাণ রক্ষায় গর্বিত হল বাংলা।
তিনি গত বছর ২০২৪ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর দক্ষিণ বাঁকুড়ার রানিবাঁধের গোঁসাইডিতে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পের বাঘিনী জিনাতকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করেন। তাকে বাঘে আনতে সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষের শুটার ও আধিকারিকরা থাকলেও বন্দি করা যায়নি। ন'দিনের পরিশ্রমের পর বাংলার ওই বিট অফিসারের হাত ধরেই খাঁচাবন্দি হয় ওই বাঘিনী জিনাত। তিনি ছাড়াও ওই দলে ছিলেন বনরক্ষী রাজীব নস্কর, অরণ্যসাথি কালিপদ গায়েন, শম্ভু দাস ও চিকিৎসক শংকর বিশ্বাস। এই পুরস্কারে ভীষণই খুশি ওই বিট আধিকারিক মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস। তাঁর কথায় "এই সম্মান শুধু আমাকে নয়। বাংলাকে গর্বিত করবে। আমাকে আরও ভালো কাজের উৎসাহ দেবে।" দক্ষিণ বাঁকুড়ার ওই জঙ্গলে গত ২৮ শে ডিসেম্বর বিকালে গাছে চড়ে বন্দুক নিয়ে পজিশন নিয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে জিনাতকে কাবু করার চেষ্টা হলেও সফল হননি। লক্ষ্য ঠিক থাকলেও দুটি ডার্ট দাঁত দিয়ে বের করে দেয় বাঘিনী জিনাত।
কিন্তু পরের দিন ২৯ ডিসেম্বর ওই আধিকারিকের গুলি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে বাঘিনী। আজও সেই কথা মনে রয়েছে সুন্দরবনের ওই আধিকারিকের। তিনি বলেন, "ওই বাঘিনী ভীষণ চালাক। তবে লাজুক। ওকে কাবু করা সেই সময় ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমার হাত ধরে ওই কাজ হওয়ায় আমি সত্যি আজও খুশি।"
