সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির বুক চিরে বয়ে যাওয়া যমুনা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে যমুনার দূষণে দিল্লিবাসী অতিষ্ঠ। গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার বদলেছে রাজধানীর। প্রশ্ন উঠেছে, এবার কি যমুনা সংস্কার করা হবে? এই পরিস্থিতিতে যমুনাকে পথ দেখাচ্ছে ফ্রান্সের শ্যেন নদীর সংস্কার। ১০২ বছর পরে প্রথমবার সেই নদীতে জনসাধারণকে স্নানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে সেখানে। যা যমুনাকেও পথ দেখাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ অলিম্পিকে শ্যেন নদীতে সাঁতার কাটেন প্রতিযোগীরা। সেই শুরু। এবার সাধারণের জন্যও অনুমতি মিলল স্নানের। অথচ ১৯২৩ সাল থেকে 'অসুস্থ' নদীটি। কেবল স্নানই নয়, এই নদীর জল স্পর্শ করাতেও 'বিপদ' দেখছিলেন বিশেষজ্ঞরা। অভিযোগ ছিল, নদীতে প্রচুর পরিমাণে মলের খণ্ড ভাসতে দেখা যাচ্ছে। কার্যতই দূষণে ভরা সেই শ্যেন নদীই এবার সকলের সামনে নতুন নিদর্শন তৈরি করছে। বিশেষ করে যমুনার মতো দূষিত নদীর কাছে আজকের পরিচ্ছন্ন শ্যেন পৌঁছে দিচ্ছে নয়া বার্তা।
গত শতকের নয়ের দশকে শুরু হয়েছে শ্যেন পরিষ্কার করার কাজ। ভারতীয় মুদ্রায় সব মিলিয়ে ১৪০৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল ফ্রান্স প্রশাসন। জল পরিশ্রুত করতে নেওয়া হয়েছিল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য। অবশেষে ফল মিলেছে। গত সপ্তাহেই প্যারিসের বাসিন্দারা বহু দশক পর প্রথমবার স্নান করেছেন শ্যেন নদীতে।
এহেন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, দিল্লি কি এই সংস্কার থেকে শিক্ষা নেবে না? এপ্রসঙ্গে বলা যায়, ক্ষমতায় আসার আগেই প্রচারে যমুনাকে দূষণমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। এমনকী এই ইস্যুতেও কাঠগড়ায় তুলেছিল আম আদমি পার্টিকে। প্রচার চালানো হয়েছিল, দু-দুবার নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি কেজরিওয়াল সরকার। ক্ষমতায় এসে ইতিমধ্যেই ৩১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে রেখা গুপ্তার সরকার। যমুনা পরিষ্কারের জন্য দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় ২৭টি পাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে বলে দিল্লি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। আপাতত তাই আশা, যমুনাও হয়তো একদিন শ্যেন নদীর মতো সকলের স্নানের যোগ্য হয়ে উঠবে।
