সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানব সভ্যতা উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নানা ধরনের বর্জ্যের পরিমাণ। এমনকী আবর্জনা স্তূপ জমেছে মহাশূন্যেও। অর্থাৎ দূষণ কেবল পৃথিবীতেই নেই, অন্তরীক্ষকেও 'নোংরা' করে ফেলেছে মানুষ! অবশ্য অনন্ত মহাকাশে এর কোনও প্রভাব নেই। পৃথিবীর কক্ষপথেই যত সমস্যা। সেখানে পাক খাচ্ছে 'আবর্জনা'। সঠিক ভাবে বললে 'ই-আবর্জনা'। যার পরিমাণ এবার 'বিপদঘণ্টা' বাজাতে শুরু করেছে! সতর্ক করছে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি।
কিন্তু কী এই ই-আবর্জনা? তালিকাটা দীর্ঘ। অকেজো কৃত্রিম উপগ্রহ, রকেটের পরিত্যক্ত অংশ, মিশন-সংক্রান্ত আবর্জনা (লেন্স ক্যাপ বা সেপারেশন বোল্ট জাতীয় যন্ত্রপাতি), মহাকাশে মানুষ প্রেরিত বস্তুগুলির মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া যন্ত্রাংশ ইত্যাদি। যে সময় থেকে মানুষ মহাকাশ অভিযান শুরু করেছে সেই সময় থেকেই লক্ষ লক্ষ টুকরো ই-আবর্জনা জমতে শুরু করেছে কক্ষপথে। তবে সম্প্রতি এলন মাস্কের 'স্টারলিঙ্ক' কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে শুরু করার পর থেকে নাটকীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এই আবর্জনার সংখ্যা।
আর এতেই উদ্বিগ্ন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি। কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করাই নয়, তারা কাজেও নেমে পড়েছে। 'জিরো ডেবরিস' মিশন শুরু করে দিয়েছে ইএসএ। ২০৩০ সালের মধ্যেই তাদের সমস্ত মিশন থেকে ছড়ানো ই-বর্জ্য সাফাই করার লক্ষ্য সংগঠনের।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি প্রতি বছর একটি করে মহাকাশ-পরিবেশ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। যা থেকে ছবিটা পরিষ্কার হচ্ছে। আর তত অনুভূত হচ্ছে দ্রুত এই বিষয়ে সমস্ত সংস্থাকেই পদক্ষেপ করতে হবে। ১২ লক্ষের বেশি মহাকাশ-বর্জ্য জমেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এই প্রশ্নও উঠছে যে, এখনই এই নিয়ে পদক্ষেপের কী গুরুত্ব রয়েছে? বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক, তা শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছতে আরও দুই শতাব্দী লাগবে। সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা কী, জানতে চায় ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। ইএসএ যুক্তি দিচ্ছে, ক্রমশ ধ্বংসাবশেষ বৃদ্ধি মানেই মহাকাশে কোনও বস্তু উৎক্ষেপণের ঝুঁকিও বাড়বে লাফিয়ে। তাই তাদের সতর্কবার্তা মহাকাশ সত্যিকার অর্থে অব্যবহারযোগ্য হয়ে ওঠার অনেক আগেই মহাকাশ অভিযানের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। ফলে এখনই সতর্ক হওয়ার দরকার বলেই মনে করছেন বহু গবেষক।
