সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই মহাবিশ্বে মানুষ কি নিঃসঙ্গ? কেবল পৃথিবী ছাড়া কি কোথাও নেই প্রাণের স্পন্দন? এ প্রশ্ন আজকের নয়। প্রফেসর শঙ্কুকে দিয়ে সত্যজিৎ রায় এর অনুসন্ধান করিয়েছেন। কীর্তিমান প্রফেসর তাদের অস্তিত্বও টের পেয়েছিলেন। সে তো বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ। বাস্তবে কিন্তু উত্তরটা রয়ে গিয়েছে অজানাই। এবার হয়তো সেই প্রতীক্ষার অবসান হল। সৌর জগতের (Solar System) বাইরে অবস্থিত এক গ্রহ থেকে রেডিও সংকেত (Radio signal) ভেসে আসার দাবি করলেন একদল গবেষক। তাঁদের দাবি, ৫১ আলোকবর্ষ দূর থেকে ওই সংকেত এসেছে।
তাঁদের এই গবেষণার কথা প্রকাশিত হয়েছে ‘অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রো ফিজিক্স’ জার্নালে। সেখানে বলা হয়েছে, নেদারল্যান্ডসের এক রেডিও টেলিস্কোপে সেই সংকেত ধরা পড়েছে। সুদূর টাউ বুটেস নক্ষত্রমণ্ডলীর অন্তর্গত বিপুল গ্যাসসমৃদ্ধ গ্রহ থেকে ওই সংকেত এসেছে বলে দাবি গবেষকদের। তবে কেবল ওই গ্রহই নয়, মহাকাশের আরও দু’টি অঞ্চল থেকেও রেডিও সংকেত আসার কথা জানা গিয়েছে। আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষকরা ‘ক্যানসার’ নামের নক্ষত্রের ঝাঁক ও এপসাইলন অ্যান্ড্রোমিডা নক্ষত্রমণ্ডলী থেকেও সংকেত পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মতে, নিঃসন্দেহে এর মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হল টাউ বুটেস নক্ষত্রমণ্ডলীর গ্রহটি থেকে পাওয়া সংকেতটিই।
[আরও পড়ুন : রোহিঙ্গাদের বসতি তৈরিতে পরিবেশের ক্ষতি, বাংলাদেশে ধ্বংস হাজার হাজার একর বনাঞ্চল]
অন্যতম গবেষক জেক ডি টার্নার জানাচ্ছেন, এই সংকেত সৌরজগতের বাইরে প্রাণের সন্ধান সংক্রান্ত গবেষণাকে নতুন দিশা দেখাচ্ছে। গ্রহটির চৌম্বক ক্ষেত্রটি খুঁটিয়ে দেখলে তা থেকে তার আভ্যন্তরীণ চরিত্র ও আবহাওয়া মণ্ডলের উপাদান সম্পর্কেও জানা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, যে কোনও গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনার বিষয়টির সঙ্গে চৌম্বক ক্ষেত্রের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র তাকে সৌর বাতাসের কবল থেকে বাঁচায়। এর ফলেই সেখানে জীবনধারণের অনুকূল পরিবেশ গড়ে উঠেছে। একই ভাবে টার্নার মনে করছেন, ওই গ্রহটির চৌম্বক ক্ষেত্রও হয়তো তাদের সাহায্য করছে সৌর বাতাস এবং মহাজাগতিক রশ্মির হাত থেকে বাঁচতে। যদি তা সত্য়ি হয়, তবে এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা আগামী দিনে অসম্ভব বলে মনে হবে না। শঙ্কুর মতো বিশ্ববাসীও টের পাবেন তাদের স্পন্দন।