সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'যা পাখি উড়তে দিলাম তোকে' - এই বলেই স্যাটেলাইটের সিগন্যাল বেঁধে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল তিন তিনটি খুদে বাজপাখিকে। আর তারাও অক্লান্তভাবে উড়তে উড়তে ভারত থেকে পৌঁছে গেল সেই সুদূর কেনিয়া! তিনদিক দিয়ে ভারতের তিন বাজপাখির টানা এতটা পথ পাড়ি দেওয়া তৈরি করল নয়া রেকর্ড। এও বুঝিয়ে দিল, শীতে পরিযায়ী পাখিরা কীভাবে ডানার জোরে মাইলের পর মাইল পথ পেরিয়ে বেড়াতে যায় পৃথিবীর একেবারে অন্য প্রান্তে। এবং সফর শেষে ফের পথ চিনে ফিরে যায় নিজের ডেরায়। তিন বাজের এই উড়ান দেখে বিস্মিত পক্ষীবিশারদরাও।
আমুর বাজপাখি। বাজের সমাজে সবচেয়ে ছোট প্রজাতি। এদের মূল বাসস্থান সাইবেরিয়া হলেও ভারতে বেশ কয়েকটি আমুর বাজপাখি আছে। মণিপুরের তিনটি আমুর বাজ - আপাপাং, আলাং, আহুর শরীরে ছোট্ট স্যাটেলাইটের অংশ লাগিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। একেকটি পাখির ওজন মাত্র ১৫০ গ্রাম। কিন্তু মোটেই দুর্বল নয় তারা। বিশেষজ্ঞদের দেখার বিষয় এটাই ছিল যে তিন খুদে বাজের ডানার জোর কতটা। আর তাতেই চমকপ্রদ ফলাফল মিলল।
জানা যাচ্ছে, আপাপাং নামে পাখিটি মণিপুর থেকে আরব সাগর ধরে হর্ন অফ আফ্রিকা দিয়ে বিরামহীনভাবে উড়ে কেনিয়ায় থেমেছে, প্রায় ৬১০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে। এদিকে, তেলেঙ্গানা থেকে ৫৬০০ কিলোমিটার পথ উড়ে কেনিয়া পৌঁছেছে আলাং নামের বাজ। সে অবশ্য একবার মহারাষ্ট্রের কাছে থেমেছিল। আর তৃতীয় পাখি আহু বাংলাদেশ হয়ে ৫১০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কেনিয়ার সাভো জাতীয় উদ্যানে গিয়ে থেমেছে। বলা হচ্ছে, বাজের ক্ষুদ্রতম প্রজাতিই দীর্ঘতম আকাশপথের পথিক হওয়ার রেকর্ড গড়ল। তার মাঝে বেশ কয়েকটি মহাদেশ ছুঁতে ছুঁতে গিয়েছে তিন খেচর। পক্ষী বিশারদদের মতে, ভারতের তিন আমুর বাজের কীর্তি বিশ্বব্যাপী পরিযায়ী পাখিদের ভ্রমণ কাহিনিতে নতুন অধ্যায় যোগ করল।
