সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মনুষ্য চরিত্র রহস্যের ভাণ্ডার, তা তো জানা। মানব মস্তিষ্কেও যে কত কী গোপন আছে, তার ঠিক নেই। এনিয়ে সাম্প্রতিকতম গবেষণার ফলাফলে চমকপ্রদ এক আবিষ্কারের দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, মানব মস্তিষ্কের মধ্যে দিয়ে খুব সামান্য হলেও আলো নির্গমন হয়। যার প্রভাব পড়তে পারে তাঁর সাময়িক আচরণে। মানসিক প্রতিক্রিয়ায় তাৎক্ষণিক বদল আসতে পারে। বলা হচ্ছে, এই প্রথম এধরনের অতি দুর্বল ফোটন কণার নির্গমন নিয়ে যথাযথ প্রমাণ পাওয়া গেল। তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল-ই-সায়েন্স পত্রিকায়।
কী বলছে ওই গবেষণাপত্র? 'ফটোএনসেফালোগ্রাফি' পদ্ধতিতে যে মানব মস্তিষ্কের নানা কোষের সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ করা সম্ভব, তাতে বেশ কিছুটা সহায়ক হল সাম্প্রতিক আবিষ্কার। সাধারণত এধরনের আলোক বিচ্ছুরণ দেখা যায় আগুনপোকার মতো কিছু পতঙ্গের ক্ষেত্রে। সেসব অবশ্য নির্দিষ্ট রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রতিফলন। কিন্তু মানবখুলি থেকেও এমন ঘটনা বিরলতম। যদিও সেই আলোকশক্তি অতি দুর্বল কিছু ফোটন কণা, বিজ্ঞানের ভাষায় 'আলট্রাউইক ফোটন'-এর সমন্বয় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। দৃশ্যমান আলোর চেয়ে ঢের ঢের কম তরঙ্গসম্পন্ন ওই আলো।
অ্যালগোমা, টাফ্টস এবং উইলফ্রিড লরিয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এনিয়ে গবেষণা করেছেন। নিবিড় অন্ধকারে অন্তত ২০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের উপর পরীক্ষা করা হয়েছে। লাইট সেন্সিটিভ কয়েকটি সেন্সর দিয়ে খুলির বহিরঙ্গ পরীক্ষা এবং আভ্যন্তরীণ তরঙ্গপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, ওই অবস্থায় মানুষের চোখ খোলা এবং বন্ধের সময়ে মানসিক অবস্থারও বদল হয়। এর পিছনে মস্তিষ্কের সক্রিয়তা দায়ী। তার নেপথ্যে আবার রয়েছে আলোর বিচ্ছুরণের 'গভীর খেলা'। কীভাবে তা কাজ করে? মৃদু আলো ফেললে তা নির্দিষ্ট কম্পনে তরঙ্গায়িত হয়। তাতে বিশেষ করে প্রভাবিত হয় দৃশ্য-শ্রাব্যের অনুভূতি উদ্দীপক কোষগুলি।
এই গবেষণার ফলাফল মানুষের মস্তিষ্কের স্নায়বিক সমস্যা নির্ধারণ, সমাধানে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তবে তার আগে আরও বৃহৎ নমুনা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং বড় ক্ষেত্রে এই গবেষণার ফল কতটা কার্যকরী হবে, সেটা দেখার।
