সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জলের তলায় কত যে অচেনা বিপদ লুকিয়ে, তা জানতে পারেন না খোদ সমুদ্রবিজ্ঞানীরাও। আর তাই গহন, গভীর সমুদ্রে কাজ করতে নেমে মৃত্যুমুখে পড়তে হয় তাঁদের। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, যদি বিপদ থাকে তাহলে বিপদ থেকে উদ্ধারকর্তাও থাকেন সেই একই জায়গায়। তার জলজ্যান্ত প্রমাণ মিলেছে সম্প্রতি। আকার-আকৃতি এবং স্বভাব-চরিত্রে দৈত্যসম টাইগার শার্ক বা বাঘা হাঙরের মুখে পড়া এক মহিলা বিজ্ঞানীকে জড়িয়ে ধরে প্রাণ বাঁচাল এক অতিকায় তিমি! শুনে আশ্চর্য মনে হলেও এটাই খাঁটি সত্যি। সোশাল মিডিয়ায় হাম্পব্যাক হোয়েলের এই কীর্তি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। আপাতত ভয়াল অথচ স্বভাবে নরম তিমির প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা।
সে এক রুদ্ধশ্বাস ঘটনা। নিজের কাজ করতে সবরকম সুরক্ষা নিয়ে সমুদ্রের তলদেশে গিয়েছিলেন এক মহিলা সমুদ্রবিজ্ঞানী। তাঁর অজান্তেই পিছু ধাওয়া করছিল একটি টাইগার শার্ক। এধরনের হাঙর যেন সাক্ষাৎ যমদূত! একবার কাউকে আক্রমণ করলে তাঁর জীবন নিয়েই ছাড়ে। সেভাবেই ওই মহিলাকে শিকারের ছক ছিল টাইগার শার্কটির। তা টের পাওয়া মাত্রই তার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে পড়িমরি করে সাঁতরাতে থাকেন সমুদ্রবিজ্ঞানী। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রাণ বাঁচাতেই যেন এগিয়ে এল বিশালাকার হ্যাম্পব্যাক হোয়েল। প্রথমে নিজের পাখা দিয়ে ঠেলে ওই মহিলাকে নিয়ে যান নিরাপদ এক স্থানে। কিন্তু তাতেও টাইগার শার্কের নজর এড়ানো যায়নি। হাঙরটি ক্রমশ এগিয়ে যেতে থাকে শিকারের দিকে।
আর এখানেই ঘটে গেল চমকপ্রদ ঘটনা। হাম্পব্যাক হোয়েলটি দুই ডানায় রীতিমতো জড়িয়ে ধরল ওই মহিলাকে। টানা ৭ মিনিট ধরে এভাবেই ভেসে ছিল তারা। শিকার এত সহজ নয়, বুঝে পিছু হঠে হামলাকারী হাঙরটি। সরে যায় সে। প্রাণরক্ষা পেয়ে বারবার তিমিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ওই বিজ্ঞানী। এই ঘটনায় অবশ্য বিশেষ বিস্মিত নন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, হাম্পব্যাক হোয়েলের প্রকৃতি মানুষের মতো সমাজবদ্ধ থাকা, একে অপরের পাশে থাকা। তারা নিজেদের সদস্যদের প্রতি যত্নবান। একইসঙ্গে অন্য কোনও প্রজাতিকে বিপদে পড়তে দেখলেও এগিয়ে আসে। মহিলা বিজ্ঞানীকে হাঙরের কামড় থেকে বাঁচানো তাদের সেই যত্নবান আচরণেরই বহিঃপ্রকাশ।
