সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম বিশ্বের দেশগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহাকাশ গবেষণায় এগিয়ে এসেছে ভারত। রাশিয়া, আমেরিকার পাশে এই ক্ষেত্রে ভারতের নামও জ্বলজ্বল করছে। সম্প্রতি মার্কিন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো উদ্যোগ নিয়ে দেশেরই এক সন্তানকে পাঠিয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে। এই মুহূর্তে 'অ্যাক্সিয়ম-৪' মিশন ভারতীয় বায়ুসেনার সেই গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা এখন আমাদের আকাশপথের পথিক! আর মহাশূন্যে ভেসে শুভাংশু দেখিয়েছেন নতুন পথ। তাঁকে ঘিরে এবার মহাকাশ অভিযানে বড়সড় বিনিয়োগ এগোল ভারত। জানা যাচ্ছে, নাসা, ইসরো, স্পেস এক্সের যৌথ উদ্যোগে 'অ্যাক্সিয়ম-৪' মিশনে শুভাংশুর অংশগ্রহণের খরচ দিয়েছে ইসরো। নয় নয় করে সেই অঙ্ক ৬৫ মিলিয়ন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় তা প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি!
গত ২৫ জুন ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে রওনা দিয়ে মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছেছেন চার মহাকাশচারী। অভিজ্ঞ নভশ্চর পেগি হুইটসনের নেতৃত্বে সেখানে গিয়েছেন ভারতের শুভাংশু শুক্লা, পোল্যান্ডের উইসনিউস্কি এবং হাঙ্গেরির টিবোর কাপু। ২ সপ্তাহর এই অভিযানে ইতিমধ্যে সপ্তাহখানেকের বেশি তাঁরা কাটিয়ে ফেলেছেন স্পেস স্টেশনে। সেখানে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করছেন চার নভশ্চর। এই অভিযানে ভারতসন্তান শুভাংশু শুক্লার অংশগ্রহণ নানা দিক থেকেই বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর এবং দেশের ক্ষেত্রে এ এক গগনচুম্বী সাফল্য তো বটেই। এহেন অভিযানে সুযোগ পাওয়া ভারতের নিজস্ব মহাকাশ গবেষণাকে অনেকটা এগিয়ে দেবে বলে মনে করছে ইসরো।
অ্যাক্সিয়ম-৪ অভিযানে মহাকাশযাত্রী এই চারজন। ফাইল ছবি
শুভাংশু এই অভিযানে যাওয়ার পরপর কৌতূহলী মহলে প্রশ্ন উঠেছিল, এত বড় মিশনের জন্য কত অর্থ উপার্জন করছেন শুভাংশু? উত্তর জানার পর অনেকেই হতাশ। কারণ, 'অ্যাক্সিয়ম-৪' মিশনের পাইলট শুভাংশু শুক্লা এর জন্য একটি টাকাও পাবেন না। বরং ভারতই এই অভিযানে অর্থ খরচ করে তাঁকে পাঠিয়েছে। ৬৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে এর জন্য। আর এখানেই চমক ভারতের।
শুভাংশুর দৌলতে গোটা বিশ্বের কাছে আজ স্পষ্ট হয়েছে, মহাকাশ অভিযানে মোটা অর্থ বিনিয়োগের পথে হেঁটেছে ভারত এবং এই বিনিয়োগ চলবে। এই মুহূর্তে মহাকাশ বিনিয়োগে এগিয়ে আমেরিকার একাধিক বেসরকারি সংস্থা। ধনকুবের এলন মাস্কের স্পেস এক্স তার মধ্যে পয়লা নম্বরে। মানুষকে নিয়ে মহাশূন্যে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে তারা। হাতে হাত ধরে সেই প্রকল্পে সংযুক্ত হচ্ছে ভারতও। ৭০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ প্রস্তুত দেশ। আসন্ন গগনযান মিশন। তারপর আরও একগুচ্ছ গবেষণা কাজের পরিকল্পনা তৈরি ইসরোর। বোঝাই যাচ্ছে, আকাশ গবেষণার ইতিহাসে নিজের নাম আরও উজ্জ্বল করে তোলাকে পাখির চোখ করেছে।
