সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ কাটালেই অনন্ত মহাশূন্য। আর সেখানে পৃথক বিজ্ঞান। অভিকর্ষ না থাকায় হাঁটাচলা থেকে খাওয়াদাওয়া, ঘুম - সবটাই আলাদা। আর সেই কারণেই মহাকাশ অভিযানের আগে নভশ্চরদের বিশেষ প্রশিক্ষণ চলে। মহাকাশে ভ্রমণের আগে এবং পরে সময়টা আলাদা হয়ে যায়। পৃথিবীর সমস্ত দৈনন্দিন কাজের ধরন বেমালুম বদলে যায় মহাশূন্যে। কীভাবে সেখানে খাওয়াদাওয়া হয়? কীভাবেই বা নিদ্রাযাপন? আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে ফিরে সেসবেরই ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা।
আসলে মহাকর্ষ বল শূন্য থাকায় মহাকাশে ভাসমান অবস্থায় থাকতে হয়। রোজকার দিনযাপন, খাওয়া-ঘুম সবকিছুর ধরনই ভিন্ন। সেই পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সাধারণত তরল জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন মহাকাশচারীরা। মাঝেমধ্যে কঠিন খাবারও খাওয়া যায়। তবে তা অবশ্যই হতে হবে সহজপাচ্য। তাই গ্রিলড চিকেন, টুনা মাছের মতো খাবার থাকে তাঁদের সঙ্গে। এবার প্রশ্ন হল, মাধ্যাকর্ষণের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ায় এমনিতেই শরীরের পেশিগুলি শিথিল হয়ে যায়, কমে হাড়ের ওজন। গোটা শারীরবিজ্ঞানটাই বদলে যায়। এই পরিস্থিতিতে খাবার কীভাবে হজম হয়? সম্প্রতি ইসরোর ল্যাবে তৈরি হওয়া একটি ভিডিও দেখিয়ে শুভাংশু বলছেন, মাইক্রোগ্র্যাভিটিতে হজমের তেমন কোনও সমস্যা হয় না।
মহাকাশ স্টেশনে জমিয়ে খাওয়াদাওয়া শুভাংশু শুক্লাদের।
শুভাংশুর ব্যাখ্যা, মহাকাশে পেশির শিথিলতার কারণে সংকোচন-প্রসারণে অনেকটা সময় লাগে। ফলত খাবার হজম হওয়াও বেশি সময়ের ব্যাপার। তরল ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার বর্জ্যে পরিণত হওয়ার আগে পর্যন্ত হজম হতে থাকে। কারণ খাদ্যকণাগুলি অন্ত্রের ভিতর ধীরে ধীরে ভাঙতে থাকে। সেই বিজ্ঞান অনুযায়ী, নভশ্চরদের শরীর শুষ্ক হওয়ার সুযোগ খুব কম। বেশিরভাগ সময়েই আর্দ্রতা বজায় থাকে।
শুভাংশুর মতে, খাবার হজমের এই প্রক্রিয়াটিও অভ্যাস করতে হয় নভশ্চরদের। সেখানে গোলমাল হলে মহাশূন্যে খুব বেশি সময় কাজ করা যায় না। অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের অন্যতম মহাকাশচারী হয়ে শুভাংশু শুক্লা প্রায় ১৪ দিন মহাকাশ স্টেশনে কাটিয়ে এসেছেন। সেখানে তাঁর গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল মহাশূন্যে মানুষের শারীরিক প্রক্রিয়া কীভাবে সাড়া দেয়, সেই বিষয়টি। সেই পরীক্ষানিরীক্ষা থেকেই শুভাংশু নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
