সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির দৌড় যে কত লম্বা, তার ঠিক নেই। একদিন যা ছিল কল্পবিজ্ঞান, আজ সেটাই বাস্তব। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবই বুঝি সম্ভব! মহাশূন্যে যৌন মিলনে 'সৃষ্টিসুখের উল্লাসে' মেতে ওঠাও যায়। তা ইতিমধ্যে প্রমাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে চিন। জানা যাচ্ছে, অক্টোবরে পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য চিনের মহাকাশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৪টি ইঁদুরকে। সেখানে তাদের জন্য পৃথিবীর মতো কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করা হয়। সেখান থেকে ফেরার পর একটি স্ত্রী ইঁদুর গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব করেছে বলে খবর। চিনা বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাশূন্যে জননতন্ত্র অর্থাৎ রিপ্রোডাকটিভ সিস্টেমের ক্ষেত্রে এই ঘটনা বড় সাফল্য। এর উপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে মানুষের মহাকাশ সফরের খুঁটিনাটিও বোঝা সম্ভব।
মহাশূন্যে চিনের একটি স্পেস স্টেশন আছে। তার নাম তিয়াংগং। সেখানে সারাবছর ধরেই কোনও না কোনও পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে থাকে চিন। শেনঝৌ-২১ মিশনের আওতায় গত অক্টোবরে চারটি ইঁদুরকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই অভিযানের লক্ষ্য, মহাশূন্যে পৃথিবীর মতো পরিবেশ তৈরি করা। সেই কাজ কতটা এগোল, তা বুঝতে সেখানে ইঁদুর পাঠানো হয়েছিল। স্তন্যপায়ী প্রাণী হিসেবে নানা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় ইঁদুরকে ব্যবহার করা হয়। চিনও তার ব্যতিক্রম নয়। পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরের অক্ষকেন্দ্রিক তিয়াংগং স্পেস স্টেশনে স্বভাবতই ভারহীন অবস্থায় থাকে সকলে। আর সেই অবস্থাতেই সেখানে পৃথিবীর অনুকূল উষ্ণতা, বায়ুমণ্ডল, খাবার, বর্জ্য নিষ্কাশন-সহ একাধিক ক্ষেত্র তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
শেনঝৌ-২১ মিশনে আওতায় যে ইঁদুরগুলি পাঠানো হয়েছিল, তাদের উপর নজর রেখে দেখা যায় যে মহাশূন্যের কৃত্রিম পরিবেশে তারা বেশ ভালোই আছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় ইঁদুরগুলিকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর একটি স্ত্রী ইঁদুর গর্ভবতী হয়। ডিসেম্বরের ১০ তারিখ ন'টি বাচ্চার জন্ম দেয়। তার মধ্যে ৬টি বেঁচে রয়েছে, শতাংশের নিরিখে যা বেশ ভালো। সদ্যোজাতদের উপর ভালোভাবে নজরদারি করে দেখা যায়, তারা বেশ স্বাস্থ্যবান, স্বাভাবিক আচরণ করছে। এমনকী মাও দিব্যি আছে। এই ঘটনার পরই চিনা বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাশূন্যে যৌন মিলনে প্রাণ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এটা সাফল্যের নমুনা। এর উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে মহাশূন্যে মানুষের কার্যকলাপ নির্ধারিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
