সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গঙ্গা (Gana), সিন্ধু ও ব্রহ্মপুত্র (Brahmaputra )। তিন নদীর জলের পরিমাণই ক্রমান্বয়ে বাড়তে শুরু করেছে। হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতমালার হিমবাহ দ্রুত গলতে থাকাতেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অচিরেই এই নদীর অববাহিকায় অবস্থিত অঞ্চলগুলিতে বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যার ধাক্কায় রাতারাতি সমস্যায় পড়বেন অন্তত ১০ কোটি মানুষ। এমনই আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।
গবেষক মহম্মদ ফারুক আজমের নেতৃত্বে ইন্দোরের আইআইটির এক গবেষক দল হিমবাহের গলন নিয়ে গবেষণা করেছে। তাদের গবেষণাপত্রটি ‘দ্য জার্নাল সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকরা দাবি করেছেন, যদি এভাবেই হিমবাহ গলে যেতে থাকে, তাহলে শতাব্দী শেষ হতে না হতেই নদীর জলের সরবরাহের সমস্যা তৈরি হতে বাধ্য।
[আরও পড়ুন: ৩ হাজার বছরের মমির সিটি স্ক্যান! উঠে এল কোন রহস্য?]
হিমবাহের গলন, বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming), আবহাওয়ার পরিবর্তনের মতো একাধিক বিষয়কে একত্রিত করে তা নিয়ে আড়াইশোরও বেশি গবেষণাপত্র খতিয়ে দেখে তা থেকে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেছেন গবেষকরা। এবং তাতে দেখা যাচ্ছে যে হারে হিমবাহে গলন দেখা যাচ্ছে, তাতে অচিরেই গঙ্গা-সহ বাকি নদীগুলির জলের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এর সঙ্গে বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টি যোগ হয়ে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বিভিন্ন এলাকায়।
এমনিতে হিমবাহ গলা জলই নদীগুলির জলের পরিমাণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ১০ কোটি মানুষ এই জলের উপরে নির্ভরশীল। তাও গঙ্গা কিংবা ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় জলের চাহিদা মেটাতে বৃষ্টির জলও রয়েছে। কিন্তু সিন্ধু উপত্যকায় পরিস্থিতি আলাদা। সেখানে হিমবাহ গলা জলই একমাত্র উৎস। তবে বৃষ্টির চেনা চেহারাও বদলাচ্ছে। সেই সঙ্গে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এর প্রভাব পড়ছে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাতেও।
[আরও পড়ুন: জিরাফের চেয়েও লম্বা! প্রাচীন যুগের দৈত্যাকার গণ্ডারের সন্ধান দিলেন বিজ্ঞানীরা]
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ২০৫০ সাল পর্যন্ত এইভাবে গলনের মাত্রা বাড়তেই থাকবে। তারপর তা কমতে শুরু করবে। কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকলেও সামগ্রিক ভাবেই তা কমে যাবে। সেই সময় শুরু হবে অন্য সমস্যা। তাই এখন থেকে সাবধান হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন গবেষকরা। ত্রিস্তরীয় পদ্ধতিতে হিমবাহের উপর পর্যবেক্ষণ চালানো ও অন্যান্য পদ্ধতিতে পরিস্থিতিকে বদলানো সম্ভব, এমনই আশার বাণী শোনাচ্ছেন গবেষকরা।