বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: জুনে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি উত্তরে। ভরা বর্ষায় উলটপুরাণ। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না-মেলায় বেড়েছে তাপমাত্রা। আবহাওয়া দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর পূর্ব প্রান্ত নিচে নেমে যাওয়াতেই বিপদ ঘনিয়েছে। বর্ষার একটানা বৃষ্টি মিলছে না। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি পরই চড়চড়িয়ে বাড়ছে গরম। জুলাইয়ের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চললেও দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং-সহ একাধিক জায়গায় গরমে নাজেহাল সাধারণ বাসিন্দা-সহ পর্যটকরা। জুলাইয়ের শুরুতেও ফ্যান চলছে পাহাড়ে। এসিও চালাতে হচ্ছে বেশ কিছু জায়গায়।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসে উত্তরে গড়ে ৬০০ থেকে ৮০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে স্থানভেদে বিভিন্ন হয়। যেমন, উপরের পাচটি জেলা অর্থাৎ দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় এই সময় বেশি বৃষ্টি হয়। গড়ে ৭০০ থেকে ১০০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। তবে দুই দিনাজপুর এবং মালদহ নিয়ে গৌড়বঙ্গে জুন মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম থাকে। এবার বর্ষা আগে ঢুকে পড়লেও সাড়া ফেলতে পারেনি। জুন মাসে উত্তরে স্বাভাবিকের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃষ্টি কম হয়েছে। অর্থাৎ উত্তরে গড়ে ৯৬ মিলিমিটার থেকে ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি কম হয়েছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলায় ১১২ মিলিমিটার থেকে ১৬০ মিলিমিটার কম বৃষ্টি হয়েছে। যতটুকু বৃষ্টি হয়েছে সেটাও সর্বত্র নয়, বিক্ষিপ্তভাবে চলছে।
একই শহরের একপ্রান্তে বৃষ্টি অন্যপ্রান্তে কাঠফাটা রোদের দৃশ্য নজর কেড়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হলেও তাপমাত্রা নামেনি। উলটে বেড়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, "এমন অস্বাভাবিক ঘটনার কারণ, মৌসুমী বায়ু অনেকটা আগে ঢুকে পড়লেও শক্তি সঞ্চয় করে উঠতে পারেনি। ওই কারণে জুন মাসে উত্তরের পরিচিত বর্ষার বৃষ্টি মেলেনি। উলটে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরমের অস্বস্তি বেড়েছে। স্থানীয়ভাবে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়েছে।" তিনি জানান, এখন মৌসুমী বায়ু অক্ষরেখার পূর্ব প্রান্ত অনেকটা নিচে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। সেটা উপরে না উঠে আসা পর্যন্ত বর্ষার একটানা বৃষ্টি মিলবে না। তবে কি আগামী কয়েক দিন বৃষ্টি হবে না? আবহাওয়া গবেষক তথা ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক মধুসূদন কর্মকার বলেন, "বৃষ্টি হবে। তবে সেটা বিক্ষিপ্তভাবে। যে কারণে সাময়িক তাপমাত্রা কোনও এলাকায় কিছুটা নামলেও পরে লাফিয়ে বাড়বে।
