সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি মেরুদেশের বাইরে সবুজ, গোলাপি, বেগুনি রঙের অরোরা বোরিয়ালিসের ছটায় ভরে গিয়েছিল ইউরোপের একাধিক দেশের আকাশ। এবার সমুদ্রের জলেও রং! রাতের প্রশান্ত মহাসাগরের জলে গাঢ় লাল রঙের আলোর ঝলকানি চোখে পড়ে আকাশে উড়ন্ত এক পাইলটের। তিনিই ছবি তুলে রাখেন। পরে রক্তবর্ণ প্রশান্ত মহাসাগরের সেসব ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। তুমুল ভাইরাল হয়। তা দেখে বিজ্ঞানীরা উৎসুক হয়ে উৎস সন্ধানে নামেন। কীসের জেরে এমন ম্যাজিক? তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আসলে প্রশান্ত মহাসাগরে রাতে প্রচুর জলযান চলে। এগুলো মূলত ফিশিং বোট বা মাছ ও নানা সামুদ্রিক প্রাণী শিকারের জলযান। তার বেশিরভাগ আবার চিনের। সমুদ্র থেকে নানা ধরনের মাছ ছাড়াও টার্গেট থাকে বড় বড় স্কুইড শিকার। কারণ, এসব চিন এবং এশিয়া মহাদেশের একাধিক দেশে সামুদ্রিক খাবার হিসেবে অতি সুস্বাদু ও জনপ্রিয় এবং এসব চড়া দামে বিক্রি করে ভালো আয় হয়। মনে হচ্ছে তো এসবের সঙ্গে লাল আলোর কী সম্পর্ক? আছে আছে, সম্পর্ক আছে। পাইলটের তোলা ভাইরাল ছবিগুলি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আসল কারণ খুঁজে পেয়েছেন।
আসলে ওই আলো তেমন কিছুই নয়, লেজার এবং LED রশ্মির সমাহার। চিনা জলযানগুলি থেকে একসঙ্গে এমনভাবে লাল রঙের আলো সমুদ্রের জলে ফেলা হয় যে তা একটা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র তৈরি করে। সেই ক্ষেত্র জুড়ে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ে সমুদ্রের তলদেশ পর্যন্ত। আর তার তরঙ্গদৈর্ঘ্যে হুবহু মিলে যায় দৈত্যাকৃতি স্কুইডদের জলকেলিতে তৈরি হওয়া তরঙ্গের সঙ্গে। ফলে তারা লাল আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠে আসতে থাকে। তাতে জলযান থেকে স্কুইড শিকার করতে সুবিধা হয়।
কিন্তু স্কুইড শিকারে এটা কি নতুন কোনও কৌশল? জানা যাচ্ছে, লাল লেজার রশ্মির প্রতি এই সামুদ্রিক প্রাণীদের আকর্ষণের কথা জানাজানি হতেই সহজ পদ্ধতি হিসেবে চিন এই কৌশল প্রয়োগ শুরু করেছে। এতে কম পরিশ্রমে বিশাল মুনাফা সম্ভব। আর রাতের আকাশ থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে তাকালে স্রেফ রক্তবর্ণ আলোর ঝলকানি ছাড়া কিছুই চোখে পড়বে না।
