স্টাফ রিপোর্টার: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আগেই আরও এক উৎসব! মহাজাগতিক বিস্ময় চাক্ষুষ করার এ উৎসবে সকলকে স্বাগত জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। আজ, রবিবার আকাশে চোখ রাখলে দেখা যাবে চাঁদের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ। শুধু তাই নয়, ৮২ মিনিট ধরে দেখা যাবে লাল রঙের চাঁদ। গ্রহণের প্রক্রিয়া চলবে আরও বেশি সময় ধরে। তার জেরে আকাশে দেখা যাবে 'ব্লাড মুন'।
চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে এখনও সমাজে ছড়িয়ে নানান কুসংস্কার। অন্ধবিশ্বাস কাটিয়ে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে আসার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কলকাতা জেলার কার্যকরী সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ জানিয়েছেন, কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ একাধিক জায়গায় টেলিস্কোপে লাল চাঁদ প্রত্যক্ষ করতে পারবে ছোটরা, তাদের অভিভাবকরা।
আজ, রবিবার ৭ সেপ্টেম্বর যাদবপুরের রায়পুর গার্লস হাইস্কুলের ছাদ থেকে টেলিস্কোপে দেখানো হবে চাঁদের গ্রহণ। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ, রায়পুর গার্লস হাইস্কুল যৌথভাবে ডা. কাদম্বিনী গাঙ্গুলি বিজ্ঞান সভার সঙ্গে একজোট হয়ে আয়োজন করেছে আকাশ চেনার এই অনুষ্ঠানের। যার স্লোগান, 'কুসংস্কারমুক্ত মন নিয়ে এসো। টেলিস্কোপে আকাশ চেনো।' পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কলকাতা জেলার সম্পাদক শেখ সোলেমান জানিয়েছেন, চন্দ্রগ্রহণ- কোনও রাহু, কেতুর অলৌকিক কেরামতি নয়। আমজনতার মধ্যে এই সচেতনতা ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ। ৭ সেপ্টেম্বর খালি চোখেই দেখা যাবে 'ব্লাড' বা 'কপার মুন'।
রাত ৮টা ৫৮ থেকে শুরু হয়ে সোমবার ভোররাত ২:২৫ পর্যন্ত তা দেখা যাবে। চাঁদের পূর্ণগ্রহণ হবে রাত ১১টা থেকে ১২:২২ পর্যন্ত। দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে যুক্তিবাদ, বিজ্ঞানমনস্কতা প্রসার ও বিজ্ঞান চিন্তা গঠনে ধারাবাহিক কাজ করে আসছে।
চন্দ্রগ্রহণ একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বিরল ঘটনা, কোনও কুসংস্কার নয়। চন্দ্রগ্রহণে গঙ্গাস্নান করার দরকার নেই, রান্না খাবারে বিষক্রিয়া হয় না, খাবার নষ্ট বা ফেলে দিতে হয় না। তাই নিয়ে প্রচার চলবে যাদবপুর, কসবা, তিলজলা, পার্ক সার্কাস, বালিগঞ্জ, সিঁথি, পাইকপাড়া, নিউ আলিপুর, রাজাবাজার, গোবরা, ঢাকুরিয়া, টালিগঞ্জ, বেহালায়। একাধিক জায়গায় ক্যাম্প করে টেলিস্কোপে রক্তিম চাঁদ দেখাবে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।
কুসংস্কার কাটাতে বিলি করা হবে লিফলেট। আমজনতার পাশাপাশি খুদেদের মনের অন্ধকার কাটাতে বিশেষ দুটি ফর্ম তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ এবং হেদুয়া আচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসু বিজ্ঞান কেন্দ্র। অনলাইনে সেই ফর্ম পূরণ করেছেন বহু খুদে। বড়রাও। চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সমীক্ষা আর জনমত সমীক্ষায় রয়েছে কয়েকটি প্রশ্ন। ঝটপট তার উত্তর দিয়ে জমা দিতে হবে অনলাইনেই। বিজ্ঞান যত প্রসারিত হবে কাটবে মনের অন্ধকার। চেতনার উন্মেষ ঘটাতে বদ্ধপরিকর পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।
