সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তরল অবস্থায় জল। তাপমাত্রা কমিয়ে, চাপ বাড়ালে সেই জল রূপ বদলে হয়ে যায় বরফ। আবার সেই জলই উচ্চ তাপমাত্রায় বাষ্পে পরিণত হয়। স্কুলে ভৌতবিজ্ঞান সহজে বুঝতে এই উদাহরণই দিয়ে থাকেন শিক্ষকরা। তবে উচ্চতর বিজ্ঞান বলছে, আরও একাধিক উপায়ে জল থেকে বরফ তৈরি হয়। তার মধ্যে অন্যতম অতি উচ্চচাপ। তার দৌলতে ঘরের তাপমাত্রাতেও জলকে বরফে পরিণত করা সম্ভব। এমনই নতুন এক পদ্ধতির হদিশ দিল কোরিয়ার গবেষকদল। কোরিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড সায়েন্সের দাবি, এ এক অভূতপূর্ব ফলাফল!
পদার্থের রূপবদল নিয়ে কী এমন ম্যাজিক দেখিয়েছেন কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা? ঘরের তাপমাত্রায় যদি অত্যধিক চাপ বাড়িয়ে তোলা যায়, তাহলে নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে জল একেবারে কেলাসে পরিণত হয়। সেই চাপের পরিমাণ অন্তত ২ গিগা পাস্কাল। সহজভাবে বুঝতে হলে এক বর্গমিটার জায়গায় যদি ৩৪ হাজার হাতির পা পড়ে, তাহলে যতটা চাপ তৈরি হয়, ততটা চাপে জল বরফ হয়ে যাবে। কেলাসের রূপ কেমন হবে, তাও ঠিক করে দেবে চাপের পরিমাণ। এতটা চাপ সৃষ্টি করতে পারলে জলের অণুর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশেরও অতিরিক্ত ঘনীভবন সম্ভব হয়। তার জেরে সুন্দর কেলাসাকারের রূপ নেয়।
কোরিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড সায়েন্সের গবেষকদলের দাবি, জল থেকে বরফে পরিণত হওয়ার সাধারণ পদ্ধতিগুলোর তুলনায় এই অত্যধিক চাপ তৈরির বিষয়টি বেশ জটিল। এতে কেবল আয়তাকার বরফের টুকরোই তৈরি হবে। গবেষকদলের প্রধান ড. লি জিউন উ-র মতে, উচ্চচাপে ঘরের তাপমাত্রায় জলের অণুর কেলাসিত হওয়ার তত্ত্ব বিজ্ঞানের গবেষণায় ক্ষেত্রে একটা বড় দিগন্ত খুলে দিল। আরেক গবেষক ড. লি ইউনের অনুমান, বৃহস্পতি ও শনির মতো বড় গ্রহে হয়ত এমন কেলাসিত অবস্থাতেই জলের অস্তিত্ব আছে। যদি তাই হয়, সেক্ষেত্রে প্রাণের লক্ষ্মণও থাকবে। তাই নয়া তত্ত্ব শুধু ভৌতবিজ্ঞানেরই নয়, পদার্থবিজ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞানের গবেষণাতেও নতুন পথের দিশারী হয়ে উঠবে।
