সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জন্ম-মৃত্যু নাকি মহাশক্তিমানের হাতে বাঁধা! জন্মের মতো মৃত্যুর সময়ও নির্ধারিত। পৃথিবীর ক্ষেত্রেও তাই। 'শেষের সেদিন' নিয়ে আগাম আন্দাজের কথা শোনালেন বিজ্ঞানীরা। বলা হচ্ছে, 'বিগ ব্যাং' অর্থাৎ মহাবিস্ফোরণে জন্ম হয়েছিল পৃথিবীর। ঠিক উলটো পদ্ধতি অর্থাৎ 'বিগ ক্রানচ' বা মহাসংকোচনে পৃথিবীর মৃত্যু হবে। এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণা। সেই দিনটি কবে? এর উত্তরে যে হিসেব পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পৃথিবীর আয়ুষ্কাল এখনও ঢের বাকি। বিজ্ঞানীদের মতে, ১১ বিলিয়ন অর্থাৎ ১১০০ কোটি বছরের মধ্যে পৃথিবীর প্রসারণ থেমে যাবে। তারপর সে সংকুচিত হবে। আর ২০ বিলিয়ন বা ২০০০ কোটি বছরের মধ্যে সংকোচন শেষ হয়ে ধীরে ধীরে মৃত্যু হবে পৃথিবীর। সময়ের এতটাই প্রসারণ।
স্পেনের গবেষক হোয়াং নান লু, চিনের ইউ-চেং কিউ এবং আমেরিকার হেনরি টাই - এই তিনজন মিলে 'ডার্ক এনার্জি' অর্থাৎ পৃথিবীর প্রসারণের নেপথ্যে সক্রিয় যে 'অদৃশ্য' শক্তি, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেছেন। পরীক্ষার ফলাফল, পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতেই পৃথিবীর মৃত্যু নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তাঁরা। বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর প্রসারণ ক্ষমতা কমছে। ১১০০ কোটি বছর পর্যন্ত পৃথিবীর বৃদ্ধি হবে। তারপর তা সংকোচন হতে থাকবে। সবমিলিয়ে এখন থেকে হিসেব করলে আরও ৩৩০০ কোটি বছর হল পৃথিবীর আয়ুষ্কাল।এখন থেকে ১৩.৮ বিলিয়ন অর্থাৎ ১৩৮০ কোটি বছর আগে 'বিগ ব্যাং' বা মহাবিস্ফোরণে পৃথিবীর জন্ম হয়েছিল বলে ধরা হয়।
হেনরি টাই, আমেরিকার কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের অধ্যাপক সম্প্রতি 'কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যাটান্ট', যার অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রায় ১০০ বছর আগে বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ধারণা দিয়ে গিয়েছিলেন, তাকে এক নয়া সংযোজন করেছেন। পৃথিবীর সংকোচন-প্রসারণ সম্পর্কে বোঝার ক্ষেত্রে তা অনেকটাই সাহায্য করেছে।
অধ্যাপক টাইয়ের কথায়, ''২০ বছর আগে পর্যন্ত আমরা বিশ্বাস করতাম যে কসমোলজিক্যাল কনস্ট্যান্ট সর্বদা ইতিবাচক। ফলে পৃথিবী সর্বদাই প্রসারিত হবে। কিন্তু নতুন গবেষণায় আমরা জানতে পেরেছি যে ওটা নেগেটিভও হয়। তার প্রভাবে পৃথিবী 'বিগ ক্রানচ' অর্থাৎ মহাসংকোচনের দিকে এগোবে।'' তাঁর মতে, সংকোচন পর্ব শুরুর অর্থ ধীরে ধীরে পৃথিবীর মৃত্যু এগিয়ে আসা। তাঁদের এই গবেষণা গত মাসে প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অফ কসমোলজি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোপার্টিকল ফিজিক্সে। তিন বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে পৃথিবীবাসী হিসেবে আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
