সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় নভোচর শুভাংশু শুক্লা মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন বুধবার বেলায় বারোটায়। আগে থেকেই ছিল চর্চা। কিন্তু বুধবাসরীয় সকাল থেকে আরও বেশি করে আলোচনায় ভারতীয় নভোচর। কেন তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছে এই অভিযান এবং এরপর গগনযান প্রকল্পেরও একজন হিসেবে?
আসলে এই নির্বাচন হঠাৎই হয়েছে এমন নয়। ১৯৮৪ সালে রাকেশ শর্মা প্রথম ভারতীয় নভোচর হিসেবে মহাকাশে যান। এতদিন পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন শুভাংশু। তাঁর কেরিয়ারের সূচনা ২০০৩ সালে। ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে সেবছরই যোগ দেন তিনি। ২০০৬ সালে ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগদান। খুব দ্রুতই বাহিনীতে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দেন শুভাংশু। নিজেকে গড়ে তোলেন একজন দক্ষ টেস্ট পাইলট হিসেবে। মিগ থেকে জাগুয়ার বহু বিমান উড়িয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে আকাশে কাটিয়েছেন ২ হাজার ঘণ্টারও বেশি সময়।
কেবলই দীর্ঘ সময় কাটানোর জন্যই নয়, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং নেতৃত্বদানের সহজাত ক্ষমতা তাঁকে দ্রুতই পরিচিত করে তোলে। এদিকে এনডিএ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হওয়ার পর আইআইএসসিতে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন তিনি। এরপরই বিমান ওড়ানোর পাশাপাশি মহাশূন্যের প্রযুক্তিও তাঁর প্রিয় বিষয় হয়ে ওঠে। ফলে অচিরেই তিনি ভারতীয় মহাকাশ যাত্রার এক অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন।
২০১৯ সালে গগনযান মিশনের জন্য নির্বাচিত হন শুভাংশু। এটা তাঁর জীবনের এক টার্নিং পয়েন্ট। মস্কোর ইউরি গ্যাগারিন কসমোনট ট্রেনিং সেন্টারে মহাশূন্যে টিকে থাকার কৌশল থেকে শরীরী প্রতিকূলতাকে জয় করার মতো নানা কৌশলে শিক্ষিত হয়ে ওঠেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বেঙ্গালুরুতেও প্রশিক্ষণ নেন। লাভ করেন বিশেষ দক্ষতা। ফলে শেষপর্যন্ত তাঁকে বেছে নেওয়া হয় অ্যাক্সিয়ম-৪ মিশনের জন্য। অবশেষে বুধবার বেলা ঠিক বারোটা বেজে এক মিনিটে অন্তরীক্ষে পাড়ি দিয়েছে শুভাংশুদের মহাকাশযান। স্পেসএক্স-এর তৈরি ড্রাগন মহাকাশযানে চেপেই আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দিলেন শুভাংশু-সহ চার মহাকাশচারী। প্রথমে ঠিক ছিল ২৫ মে অভিযান শুরু হবে। কিন্তু তা পিছিয়ে ৮ জুন হয়। এরপর থেকে বারবার পিছিয়েছে যাত্রার তারিখ। শেষবার দিন ধার্য হয়েছিল ২২ জুন। তাও পিছিয়ে যায়। অবশেষে বুধবার এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
