নব্যেন্দু হাজরা: কেন্দ্রীয় বাজেটে এবার পরিবেশের (Environment) দিকে বাড়তি নজর। বাতাসে দূষণের মাত্রা কমাতে ‘স্ক্র্যাপেজ পলিসি’ আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। বয়সের ভারে ন্যুব্জ গাড়িগুলিকে স্ক্র্যাপ করে নয়া গাড়ি (Cars) নামাতে মালিককে নানা সুবিধা দিতে চলেছে সরকার। অন্তত বাজেটের প্রস্তাবে তেমনই আশা দেখছেন পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকরা। আর এই পদ্ধতি একদিকে যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমনই নয়া দিশা দেখবে অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রিকেও। যথেষ্ট চাঙ্গা হতে পারে গাড়ি শিল্পও।
পুরনো গাড়ি স্ক্র্যাপ করে নতুন কিনতে হলে চাহিদা বাড়বে গাড়ির। তা জোগান দিতে নতুন করে শিল্পোদ্যোগের প্রয়োজন হবে। ফলে প্রচুর কর্মসংস্থানেরও সুযোগ মিলবে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বাজেটে (Union Budget 2021)উল্লেখ করেছেন, নয়া পদ্ধতিতে ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি এবং ২০ বছরের পুরনো ব্যক্তিগত গাড়িকে ‘স্ক্র্যাপেজ পলিসি’ র আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে পুরনো আনফিট গাড়ি বাতিল করে নতুন গাড়ি কিনতে পারবেন মালিক, যা অনেক পরিবেশবান্ধব হবে। নয়া গাড়ি কেনার সময় অনেকক্ষেত্রেই মিলবে নানা সুযোগ-সুবিধা।
[আরও পডুন: লালগ্রহের মাটিতে উড়বে কপ্টার! মঙ্গল অভিযানের ইতিহাসে জুড়ল দুই বাঙালির নাম]
ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের (NGT) নিয়ম মেনে এমনিতেই অনেকদিন আগে কেএমডিএ এলাকায় বাতিল করা হয়েছে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি। তবুও তা অন্যাত্র চলছে। কিন্তু এবারের বাজেটে পরিবেশে নজর দিতে সর্বত্রই বৃদ্ধ গাড়ি বাতিলে আইন আনা হচ্ছে। ভেহিক্যাল স্ক্র্যাপেজ পলিসি। তবে তা করা হচ্ছে ভলান্টিয়ারি স্ক্র্যাপেজ। অর্থাৎ গাড়িকে স্ক্র্যাপেজ পলিসির আওতায় আনাটা মালিকের ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল থাকবে। তিনি চাইলে নাও করতে পারেন স্ক্র্যাপ। তবে পরবর্তী গাড়ি কিনতে যে ধরনের সুযোগ সরকার দেবে, তাতে পুরনো গাড়ি অনেকেই স্ক্র্যাপ করে দেবেন। এমনই মনে করছেন পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন। এমনিতেই পনেরো বছরের পুরনো গাড়ি আর ফিট থাকে না। তবুও অনেকে বারবার মেরামত করেই তা চালান। তাতে ক্ষতি হয় পরিবেশের। বাড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও। তা কমাতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত।
[আরও পডুন: বন্যপ্রাণীরাই জঙ্গলের রক্ষক, মাটির মডেল তৈরি করে বোঝাল শিশুরা, উদ্যোক্তা ‘শের’]
পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নয়া নীতিতে লাভ হবে গাড়ি শিল্পের। কারণ, এই পদ্ধতিতে নতুন গাড়ির চাহিদা প্রচুর বাড়বে। ফলে প্রয়োজন হবে নতুন ইন্ডাস্ট্রির। সবদিক বিচার করে তাই সিদ্ধান্ত সঠিক বলেই মনে করছেন তাঁরা। বেসরকারি বাসমালিকর এই নয়া নীতিতে বেশি লাভবান হবেন। কেন্দ্রীয় বাজেটে গাড়ি শিল্পের নয়া ঘোষণায় তাঁদের কী প্রতিক্রিয়া? বাস-মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরিবেশের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত সঠিক। কিন্তু কতজন মালিক তা কিনতে পারবেন, সন্দেহ আছে। কারণ, আগের গাড়ির লোনই সঠিক সময়ে দিয়ে উঠতে পারেন না বাসমালিকরা। ফলে পুনরায় কি আর লোন তাঁরা পাবেন?”