রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: আপাত নিরীহ ব্যক্তি। কোনও বিবাদেও জড়াত না। সেই মানুষই গুলি করে খুন করল! আলিপুরদুয়ারের নিষিদ্ধপল্লিতে শুটআউটের ঘটনায় একের পর এক তথ্য উঠে আসছে। গতকাল সন্ধ্যায় মহিলাকে খুনের পরে গণপিটুনিতে মারা গিয়েছে বিশ্বদীপ দাস (৩৪) নামে ওই ব্যক্তি।
প্রথমে তাঁকে সমাজবিরোধী, দুষ্কৃতী বলে মনে করা হয়েছিল। গণপিটুনিতে তাঁকে মেরেও ফেলা হয়। কিন্তু তদন্তে উঠে আসছে অন্য তথ্য। তার বাড়ি আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পাতলাখাওয়া গ্রামে। পুলিশের খাতায় তার কোনও নাম নেই। অতীতে ওই যুবক কোনও অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলও না। সে কেন নিষিদ্ধপল্লিতে গিয়ে ওই বয়স্কা মহিলাকে খুন করল? সেই কথাই এখন জানার চেষ্টায় তদন্তকারীরা।
কেন এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ল সে? তাই নিয়ে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরাও। ঘটনা শোনার পর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছেন বাড়ির সদস্যদের। এলাকার লোকজনও হতবাক। কারণ, স্থানীয়রা তাকে শান্ত বলেই জানেন। বিশ্বদীপকে কোনওভাবে ফাঁসানো হয়েছে। ঘটনার পিছনে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন মৃতের দিদি। তিনি এই বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে ধন্দে পুলিশও।
গতকাল সন্ধ্যায় ওই নিষিদ্ধপল্লির ভিতরে তিনজন একটি বাইক চালিয়ে ঢুকেছিল। বিশ্বদীপকে নামিয়েই বাইকটি চম্পট দেয়। কেন তারা চম্পট দিল? বিশ্বদীপ ওই মাঝবয়সি মহিলাকে মাথার পিছনে গুলি চালিয়ে খুন করে। তাঁর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এল? বাইকে থাকা অন্য দুজনই বা কে ছিল? কী তাঁদের পরিচয়? টাকার বিনিময়ে কি বিশ্বদীপ গুলি চালাতে রাজি হয়েছিল? সেইসব বিষয় এখন তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখার কথা জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। তদন্তের স্বার্থে এই বিষয়ে পুলিশ পরিষ্কার কিছুই বলতে চাইছে না।
ওই ঘটনায় রবি দাস নামে এক স্কুল ছাত্র গুলিতে জখম হয়েছে। সে আলিপুরদুয়ার বয়েজ হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। বাড়ি আলিপুরদুয়ার শহরের ইটখোলা এলাকায়। বাঁধের রাস্তা ধরে ব্যাডমিন্টন খেলতে যাচ্ছিল সে। ঘটনার পর থেকে ওই নিষিদ্ধপল্লিতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এদিন সকালেও থমথমে গোটা এলাকা। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন স্থানীয়রা।