সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা বিশ্ব নিন্দায় মুখর। তবুও মায়ানমারে (Myanmar) রক্তপাত থামার কোনও চিহ্ন নেই। বৃহস্পতিবার সেনার গুলিতে প্রাণ হারালেন ৭ জন গণতন্ত্রকামী মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তাঁদের প্রায় সকলেরই মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল।
গত বুধবারই রাষ্ট্রসঙ্ঘ জুন্টার এই আগ্রাসী মানসিকতার তুমুল নিন্দা করেছিল। এমনকী মায়ানমারের ‘বন্ধু’ চিনও তাদের সমালোচনা করেছে। কিন্তু কোনও সমালোচনাই যে তারা গ্রাহ্যের মধ্যে আনতে রাজি নয় তা এদিন ফের বুঝিয়ে দিল মায়ানমার সেনা। বৃহস্পতিবার কেবল মায়িং শহরেই গুলি করে মারা হয়েছে ৬ জনকে। এছাড়া আহত হয়েছেন ৮ জন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, নিহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনেরই মাথায় গুলি চালিয়েছিল সেনা। এদিকে ইয়াঙ্গনের উত্তরে ড্যাগনেও ২৫ বছরের এক প্রতিবাদীকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে জুন্টা। জানা গিয়েছে, ওই যুবকের স্ত্রী দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যুবকটির মা হাহাকারের সুরে জানিয়েছেন, ”ওরা আমার ছেলেকে কী ভাবে মেরে ফেলল! কখনও ভাবিনি আমার ছেলেকে এভাবে মাথায় গুলি খেয়ে মরতে হবে। দেশের সব নিরস্ত্র তরুণের জন্যই আমার উদ্বেগ হচ্ছে। ওদের সকলেরই বিপদ হতে পারে। যতদিন না পরিস্থিতি বদলাচ্ছে, ততদিন কেউ শান্তি পাবে না।”
[আরও পড়ুন: দলাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচনে নাক গলানো বন্ধ করুক চিন, হুঁশিয়ারি আমেরিকার]
১ ফেব্রুয়ারি আচমকাই দেশের শাসনক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় মায়ানমার সেনা। পালটা ক্যু বা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে পথে নামে দেশের আমজনতা। কোথাও তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তো কোথাও আবার শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছে। কিন্তু আন সাং সু কি-পন্থীদের দমনে মরিয়া সে দেশের সেনা। আর সেই কারণেই নির্বিচারে দমন পীড়ন চালাচ্ছে তারা। এপর্যন্ত সেনার গুলিতে ৬০ জনের বেশি প্রতিবাদীর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাস, জলকামান, রবার বুলেটের আঘাতে অনেকে আহত হয়েছেন। এদিকে, সংবাদমাধ্যমের কাছে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন এনএলডি নেত্রী আং সাং সু কি-র (Aung San Suu Kyi) আইনজীবী হিন মাউং জ। তাঁর আশঙ্কা, সু কি-কে নতুন ভাবে আইনি জালে জড়াতে পারে সেনা।