জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: মনোনয়নে মিথ্যে তথ্য দিয়েছেন বিজেপি (BJP) প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)! এমনই অভিযোগ তুলে শান্তনুর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্ত হলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর (Mamata Bala Thakur)। ভোটের আগে এই ঘটনায় রীতিমতো চাপানউতোর শুরু হয়েছে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে (Bangaon Lok Sabha Seat)।
শনিবার সন্ধ্যায় বনগাঁয় তৃণমূল (TMC) জেলা কার্যালয়ে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মমতা ঠাকুর। সেখানেই বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী শান্তনুর বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন, নমিনেশন জমা করার সময় সঠিক তথ্য দিতে হয়, আমরা জানতে পেরেছি নিজের মনোনয়ন পত্রে প্রচুর মিথ্যে তথ্য জমা দিয়েছেন বনগাঁ লোকসভার বিজেপি প্রার্থী। ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কমিশনে হলফনামা জমা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। মমতা ঠাকুর বলেন, শান্তনুর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কৌশিক মল্লিক নামে এক ব্যক্তি ইতিমধ্যেই কমিশনে অভিযোগ জমা করেছেন।
[আরও পড়ুন: ভোট মিটতেই ফোনে সমীক্ষা কল, বড় জালিয়াতি চক্র নয় তো? ধন্দে কমিশনও]
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদের দাবি, 'শান্তনু মনোনয়নে দেখিয়েছেন তার আয় শূন্য, আবার সেই বছরই তিনি আয়কর জমা করেছেন চার লক্ষ টাকা। তাহলে যার আয় নেই সে আয়কর দেয় কোথা থেকে?' মমতা ঠাকুর এর আরও অভিযোগ, শান্তনুর স্ত্রী সোমা ঠাকুর পি.আর.ঠাকুর বিদ্যাপীঠে চাকরি করেন সেই তথ্য গোপন করা হয়েছে। পাশাপাশি, শান্তনু তাঁর স্ত্রীর মাতৃ সেনা সংগঠনের মাধ্যমে নিজের স্ত্রীর নামে যে সব সম্পত্তি কিনেছে সে তথ্যও গোপন করেছেন। মনোনয়নপত্রে এমনই মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের কাছে শান্তনুর প্রার্থী পদ খারিজের আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান মমতা ঠাকুর।
[আরও পড়ুন: ‘দুঃখ’ মিটল কি? ডেরেকের বাড়িতে বৈঠক শেষে কী বললেন কুণাল?]
উল্লেখ্য, একটা সময়ের তৃণমূল ঘাঁটি বনগাঁ বর্তমানে বিজেপির দখলে। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে সাংসদ হন শান্তনু ঠাকুর। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেই জায়গা পান তিনি। এই কেন্দ্রের মূল ফ্যাক্টর মতুয়া ভোট। অন্যদিকে, এই কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে বিশ্বজিৎ দাসকে। মতুয়া না হলেও ঠাকুরবাড়ি-সহ মতুয়াদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে বিশ্বজিতের। ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটেই বাগদা থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। আসন্ন নির্বাচনে শান্তনু ও বিশ্বজিৎ দুই প্রতিপক্ষের লড়াইয়ের আগে এবার গুরুতর অভিযোগ উঠল বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। নিয়ম অনুযায়ী, মনোনয়নপত্রে মিথ্যে বা ভুল তথ্য দিলে বাতিল হয়ে যায় মনোনয়ন। ফলে তৃণমূলের অভিযোগে উদ্বেগ বাড়ছে বনগাঁর গেরুয়া শিবিরে।