সুকুমার সরকার, ঢাকা: পদ্মা সেতু উদ্বোধন বানচাল করতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এবার সরাসরি এমনটাই বললেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে, যে কোনও ধরনের নাশকতা রুখতে নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্পেশ্যাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বি এম ডিপো-সহ দেশে সাম্প্রতিক বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডকে ‘রহস্যজনক’ হিসেবে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তিনি বলেন, “একটি মহল পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বন্ধের ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ এবং আইশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অনান্য বাহিনী-সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্তক থাকারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: চিনা ঋণের ফাঁদে পড়ে বিপাকে শ্রীলঙ্কা, বেজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে সতর্ক ঢাকা]
এছাড়া, পাবনার রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল-সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে সংশ্লিষ্টদের তৎপর হতে নির্দেশ দেন হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এখানে আমাদের বাহিনীর প্রধানরা যারা আছেন, বিশেষ করে পুলিশবাহিনী আছে এখানে, অন্যান্য বাহিনী আছেন। আমাদের এই ব্যাপারে আরও উদ্যোগ নিতে হবে যে কীভাবে আমরা এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারি। প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়নের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। আবার যারা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদেরও কিন্তু সুযোগ করে দেয়। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।”
সন্ত্রাসবাদ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের প্রত্যেকটা বাহিনী এত সজাগ, সচেতন, যে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল তারপর থেকে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা আমাদের প্রত্যেকটা বাহিনী স্থলসেনা, নৌসেনা, বিমানবাহিনী, পুলিশ বা আনসার ভিডিপি আমাদের বিজিবি প্রত্যেকেই কিন্তু দায়িত্ব পালন করেছে। মনে রাখতে হবে, যখনই আমরা এগিয়ে যাই, তখনই কিন্তু নানা ধরনের কাণ্ড ঘটানোর অপচেষ্টা কোনও কোনও মহল থেকে করে থাকে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মাণাধীন এই সেতুটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে লৌহজং, মুন্সিগঞ্জের সাথে শরিয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে। বাংলাদেশের (Bangladesh) মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য পদ্মা সেতু ইতিহাসের একটি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প বলেই মত বিশ্লেষকদের। দুই স্তর বিশিষ্ট ষ্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির (truss bridge) ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর আববাহিকায় ১৫০মিটার দৈর্ঘ্যর ৪১টি স্পান বসেছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু।