সুকুমার সরকার, ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে হিংসাত্মক ছাত্র আন্দোলনের পর স্বাভাবিক হচ্ছে বাংলাদেশ। সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ, শুক্রবার দেশের সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন বিক্ষোভের চলাকালীন হামলায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ধ্বংসযজ্ঞ ঘুরে দেখেন হাসিনা। সমস্ত কিছু দেখে আবেগঘন হয়ে পড়েন তিনি। ছাত্র আন্দোলনের জেরে নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। পাশাপাশি যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিয়েও দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টায় রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনের ক্ষয়ক্ষতি দেখে কেঁদে ফেলেন হাসিনা। দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করতে জনগণের সাহায্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেন, যারা ধ্বংসযজ্ঞে জড়িতরা দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে আছে। এদের খুঁজে বের করতে জনগণকেই সহযোগিতা করতে হবে। এর পর প্রধানমন্ত্রী একে একে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বিটিভির সব শাখা ঘুরে দেখেন। বিটিভির ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। একটি ভিডিও চিত্রও উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিটিভির কর্মচারীদের সান্ত্বনা দেন।
[আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো স্টেশন সারাতে লাগবে ১ বছর, ক্ষয়ক্ষতি দেখে আবেগঘন হাসিনা]
গত ১৮ জুলাই দুপুরের পর ছাত্র আন্দোলনের কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মাঝেই বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরে রাতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। গতকাল বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর ১০ নম্বর মেট্রোরেল স্টেশন পরিদর্শন করেন হাসিনা। জানান, এখানকার সমস্ত কিছু স্বাভাবিক করতে ১ বছর সময় লাগবে।
বলে রাখা ভালো, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশ। ছাত্র আন্দোলনে রক্তাক্ত হয়েছে দেশের নানা প্রান্ত। শাসকদল আওয়ামি লিগের অভিযোগ, এই আন্দোলনে মুখোশের আড়ালে উসকানি দিয়েছে ও সশস্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেছে জামাত ও বিএনপি। যার ফলে এখনও পর্যন্ত ঝরেছে ১৯৭টি প্রাণ। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে বহু মানুষের। হিংসাত্মক আন্দোলনের পরে কোটা সংস্কার করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ৫৬ শতাংশ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ। মুক্তিযোদ্ধা সংরক্ষণ ৩০ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৫ শতাংশ।