সুকুমার সরকার, ঢাকা: গত কয়েকমাস ধরে ‘আগুন-সন্ত্রাসে’ পুড়েছে বাংলাদেশ। এইবারের নির্বাচন পণ্ড করার লক্ষ্যে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি, জামাত-সহ সমমনা দলগুলোর বিরুদ্ধে। একের পর এক বাসে অগ্নি সংযোগ, রেললাইন কেটে নাশকতা, ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যার জেরে প্রাণহানি হয়েছে। এবার টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী পদে বসে ‘আগুন-সন্ত্রাসী’দের কড়া শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন শেখ হাসিনা।
রবিবার বিকেলে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন বোন শেখ রেহানাও। উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ এবং আওয়ামি লিগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানেই মুজিবকন্যা ঘোষণা করেন, “আমরা অগ্নিসংযোগকারী এবং তাদের হুকুমদাতাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি, যাতে কেউই জনগণকে পুড়িয়ে মারার মতো জঘন্য কাজ আর করতে না পারে।” তিনি আরও বলেন, “অগ্নিসংযোগ কাণ্ডে জড়িত দুষ্কৃতিদের মধ্যে অনেককে ইতিমধ্যে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং বাকিদেরও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ধরা হবে। যারা এ ধরণের জঘন্য কাজ করেছে, তাদের কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা অব্যাহত রাখব।”
[আরও পড়ুন: একদিন ফাইল ছুড়ে ফেলেছিলেন, বাংলাদেশের নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কৃপাপ্রার্থী সেই আধিকারিকরাই]
এদিন গণতন্ত্রের নামে বিএনপি-জামাত জোট যা করেছে, তার কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, “তাদের আন্দোলন মানেই মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা এবং বাস-ট্রেন-সহ যানবাহনে আগুন দেওয়া। সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে অনেক বাধা-বিপত্তি ছিল, অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কোনওভাবেই যেন ভোট না হতে পারে এটাই ছিল তাদের চক্রান্ত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে আন্দোলনের নামে তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে যা করেছিল, এবারও একই কাজ করেছে। একজন মা তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে বুকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন। সেভাবেই ট্রেনে দেওয়া আগুনে পুড়ে গিয়েছেন। যে দৃশ্য সহ্য করা যায় না। তারা নাকি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছে। কিন্তু সন্দেহ হয়, গণতন্ত্র বানানটা করতেই তারা জানে কি না। জনগণ বিএনপি-জামাতের নির্বাচন প্রতিহত করার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।”
এর পরই আওয়ামি লিগকে ভোট দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আনায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যারা দেশের উন্নয়ন চায় না তারা এখনও সক্রিয় এবং ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে উল্লেখ করে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। হাসিনা বলেন, “সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব, যার স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।”