সুকুমার সরকার, ঢাকা: তিনমাস আগে দেশের ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়েছে। আপাতত প্রতিবেশী বন্ধু দেশ ভারতের আশ্রয়ে রয়েছে শেখ হাসিনা। তার মাঝে পদ্মা নিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে, খোলনলচে বদলে গিয়েছে বাংলাদেশের। পরিবর্তিত পরিস্থিতি নিয়ে তিনমাস পর প্রথম প্রকাশ্যে বিবৃতি দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার ফেসবুকে আওয়ামি লিগের ভেরিফায়েড পেজে বিবৃতিটি আপলোড করা হয়। ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে যাওয়ার পর এটাই শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি।
৩ নভেম্বর, বাংলাদেশে জেলহত্যা দিবস। তাকে সামনে রেখে ২ তারিখ অর্থাৎ শনিবার শেখ হাসিনা বিবৃতি দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভোরে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলি এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেসব ঘটনা মাথায় রেখে বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ''আজকের অবরুদ্ধ বাংলাদেশ কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে পরিণত হয়েছে। মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই।'' তিনি বলেন, ''এখন শোক পালনের অধিকার নেই। আমি জাতির পক্ষ থেকে জাতীয় চার নেতার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।’’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘হত্যাকারীদের বিচারের বদলে দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছে এবং রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বরাবরই দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে দেশের গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত করতে এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে বারবার হামলা করেছে। কিন্তু দিনশেষে ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হয়নি এবং ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির যে কোনও ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকবে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ধারা সমুন্নত রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। জাতীয় চার নেতার জীবন ও কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এটাই উৎকৃষ্ট পন্থা।’’
আওয়ামি লিগ সভাপতি আরও বলেন, ''ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা হল, সময়ের পরিক্রমায় একদিন সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের চেতনা চির জাগরূক থাকবে এবং জাতীয় চার নেতার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।''