সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ বিশ্বের ব্যস্ততম জলপথগুলির মধ্যে অন্যতম সুয়েজ খাল (Suez Canal)। পণ্যবাহী জাহাজ ‘এমভি এভার গিভেন’ আড়াআড়িভাবে আটকে যাওয়ায় রীতিমতো ‘ট্রাফিক জ্যাম’ চলছে। ফলে ধাক্কা খেয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। কারণ, বিশ্বের মোট বাণিজ্যের ১২ শতাংশই হয় এই পথে। এই পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে জাহাজটিকে সরানোর কাজ। আর শেষ পাওয়া খবরে, আপাতত কিছুটা সরানো গিয়েছে জাহাজটি। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। এখনও বন্ধই রয়েছে যাতায়াত।
এদিকে, একাধিক উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০টি পণ্যবাহী জাহাজ আটকে রয়েছে সুয়েজ খালে। দক্ষিণাংশে প্রবেশের মুখে জাহাজগুলি নোঙর করে রয়েছে। প্রায় ২৫০০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে এলাকায় জাহাজগুলি দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর ফলে প্রতিদিন ১৪ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে মিশর প্রশাসনের। আটকে ৯.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। তবে উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সুয়েজ ক্যানাল অথরিটির চেয়ারম্যান ওসামা রাবি জানিয়েছেন, আপাতত কিছুটা সরানো হলেও, রাস্তা এখনও বন্ধ। ড্রেজিং, টাগ বোটস এবং জোয়ার এলে হয়তো আগামী সপ্তাহের শুরুতেই ‘এমভি এভার গিভেন’ জাহাজটিকে সরানো সম্ভব হবে।
[আরও পড়ুন: মার্কিন মদতে বলীয়ান হয়ে ১৩ চিনা অনুপ্রবেশকারীকে আটক করল তাইওয়ান]
এদিকে, সুয়েজ খালের পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবারই কেন্দ্র সরকারের বাণিজ্য দপ্তর একটি বৈঠক ডাকে। সেখানে পণ্যবাহী জাহাজগুলির জন্য বিকল্প পথ, ভাড়া, বন্দরগুলিকে সতর্কীকরণের বিষয় ও অত্যাবশ্যক সামগ্রী নিয়ে যাওয়া জাহাজগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। ওই বৈঠকে স্থির করা হয় যে, ভারতমুখী বেশকিছু পণ্যবাহী জাহাজকে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ দিয়ে ঘুরিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হবে। এই পথেই ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশ থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে ভারত। এরমধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত জ্বালালি তেল, লোহা, স্টিল, যন্ত্রাংশ, গাড়ি ও বস্ত্র-সহ বেশ কিছু পণ্য।
উল্লেখ্য, কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুয়েজ খাল লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করে। এটি এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ। ফলে সুয়েজ খাল যথেষ্ট ব্যস্ত পথ। এটি বন্ধ থাকলে যে এশিয়া-ইউরোপের জলপথে পণ্য পরিবহনে বড় প্রভাব পড়বে তা বলাই বাহুল্য। ক্ষতির পরিমাণ যে কতটা তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পরিসংখ্যানে। খালটিতে জাহাজ চলাচল ব্যহত হওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববাণিজ্যে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে।