সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সিমরানজিৎ সিংয়ের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল। কানাডার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ব্রিটিশ-কলম্বিয়ার সুরে শহরে সিমরানজিতের বাড়ির সামনে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। কিন্তু কে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত শুরু করেছে কানাডা প্রশাসন। এই ঘটনায় ভারতের দিকেই আঙুল তুলছে খলিস্তানিপন্থী সংগঠনগুলোর।
কানাডার সিবিসি নিউজ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত দেড়টা নাগাদ সিমরানজিতের বাড়ির হামলা হয়। গুলি চলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ। এবিষয়ে শুক্রবার কানাডার এক পুলিশ আধিকারিক সর্বজিৎ সংঘ বলেন, “সিমরানজিতের বাড়িতে অনেকগুলো বুলেটের চিহ্ন খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। বাড়ির সামনে থাকা একটি গাড়ি খুব বাজেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গুলিতে। ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশপাশের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” জানা গিয়েছে, সিমরানজিৎ সিং নিহত কুখ্যাত জঙ্গি নিজ্জরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। গত ২৬ জানুয়ারি সিমরানজিতের নেতৃত্বে খলিস্তানপন্থীরা কানাডার ভ্যানকোভারে ভারতীয় দূতাবসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধ-ঝড়েও জ্বলছে শিক্ষার প্রদীপ! মাটির নিচে শয়ে শয়ে স্কুলে পাঠ ইউক্রেনীয় শিশুদের]
এই প্রেক্ষিতে এই হামলায় ভারতের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে খলিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলো। এদিনের হামলা নিয়ে ব্রিটিশ-কলম্বিয়া গুরুদ্বার কাউন্সিলের মুখপাত্র মনিন্দার সিংয়ের অভিযোগ, “মনে হচ্ছে এটা যেন ভারতের কোনও রাজ্য। তাদের লোকেরা এখানকার লোকেদের ভয় দেখানোর দায়িত্ব পালন করছে। নিজ্জরের সঙ্গে সিমরানজিতের যোগাযোগ থাকা এই হামলার অন্যতম কারণ হতে পারে।” মনিন্দারের দাবি, এই ঘটনার আগে সিমরানজিৎ নিজেও প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করেছিলেন। পুলিসের দ্বারস্থও হয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ জুন সুরে শহরে একটি গুরুদ্বারের কাছে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয় নিজ্জরকে। খলিস্তানিপন্থী সংগঠন খলিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান ছিল নিজ্জর। গুরপতবন্ত সিং পান্নুন পরিচালিত ‘শিখস ফর জাস্টিস’-এর বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সন্ত্রাসী এজেন্ডা প্রচারের দায়েও অভিযুক্ত ছিল সে। তাকে প্রায়শই ভ্যানকোভারের ভারতীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা যেত। কানাডার একাধিক পরিচিত মুখের সঙ্গেও আনাগোনা ছিল তার।
এর পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। নিজ্জর খুনে অভিযোগ তুলেছিলেন দিল্লির দিকে। তার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশ থেকেই অপর দেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করা হয়। এর পর ভারত থেকে ৪০ জন কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে নেয় কানাডা। ট্রুডোকে সরকারকে পালটা দিয়ে ভারত বারবার অভিযোগ করে এসেছে কানাডা সন্ত্রাসবাদীদের চারণভূমি হয়ে উঠেছে। কানাডার প্রশয়েই খলিস্তানিরা নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করছে। ভারতবিরোধী কার্যকলাপ চালাচ্ছে।