সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেন। দুর্গম এই হিমবাহে অতন্দ্র প্রহরায় থাকে ভারতীয় সেনা। চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও শত্রুদের ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিতে চব্বিশ ঘণ্টা টহল দেন জওয়ানরা। ‘অপারেশন মেঘদূতে’র মাধ্যমে 'হানাদার' পাকিস্তানের কাছ থেকে তীব্র লড়াই করে এই সিয়াচেন ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারত। যার ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। ভারতের বীরগাথা হল সিয়াচেন। সমতল হোক কিংবা দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল ভারতীয় জওয়ানরা কোনও পরিস্থিতিতেই শত্রুদের চোখ রাঙানি মেনে নেন না ফের একবার সেকথা স্মরণ করিয়ে দিলেন প্রতিরক্ষা রাজনাথ সিং।
এএনআই সূত্রে খবর, সোমবার সিয়াচেন হিমাবাহের বেস ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজনাথ সিং। সিয়াচেনের কুমার পোস্টে মোতায়েন সশস্ত্র বাহিনীর আধিকারিক ও জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করেন। মিষ্টি খাওয়ান সকলকে। সেখানেই কীভাবে ভারতীয় জওয়ানদের নজরদারিতে সুরক্ষিত থাকে দেশের সার্বভৌমত্ব সেই কথা তুলে ধরেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। সকলের উদ্দেশে তিনি বলেন, "বিশ্বের উচ্চতম যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেন হিমাবাহ। আপনারা যেভাবে এখানে দাঁড়িয়ে দেশকে রক্ষা করছেন তাঁর জন্য আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি। এই সিয়াচেন কোনও সাধারণ স্থান নয়। এটা ভারতের অধ্যবসায় ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। দেশের প্রতি আমাদের যে দৃঢ় সংকল্প রয়েছে তা বহন করছে সিয়াচেন। ভারতের রাজধানী দিল্লি। আমাদের অর্থনৈতিক রাজধানী মুম্বই, প্রযুক্তির রাজধানী বেঙ্গালুরু। আর এই সিয়াচেন হল ভারতের বীরত্ব ও সাহসিকতার রাজধানী।"
[আরও পড়ুন: বলো ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’, মোদির প্রশংসায় গান বেঁধে চরম হেনস্তার শিকার কর্নাটকের যুবক!]
প্রতিকূল আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে বহুবার ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে পাকিস্তান। জেহাদের বিষ ছড়িয়ে ক্রমাগত কাশ্মীর উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে চলেছে পড়শি দেশ। কিন্তু জেহাদিদের সমস্ত ছক বানচাল করে দেশকে রক্ষা করছেন ভারতীয় জওয়ানরা। এর আগে বহুবার রাজনাথ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সীমান্তে কোনও দেশের চোখ রাঙানি মেনে নেওয়া হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এদিন সিয়াচেনের ইতিহাস তুলে ধরে রাজনাথ বুঝিয়ে দিলেন ভারত আজ এমন এক শক্তি হয়ে উঠেছে যাকে পরাস্ত করা সহজ হবে না। তাই নাম না করেও ইঙ্গিতে ভারতকে সমঝে চলার বার্তা পাকিস্তানকে দিলেন তিনি।
বলে রাখা ভালো, যত দিন যাচ্ছে সীমান্তে সামরিক পরিকাঠামো আরও উন্নত ও শক্তিশালী করছে ভারত। সোমবার সিয়াচেনের সেনাবাহিনীর সমস্ত পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন রাজনাথ। সিয়াচেনে শহিদদের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেনাপ্রধান মনোজ পাণ্ডে। এদিন তাঁদের সঙ্গে দেখা করে 'ভারত মাতা কি জয়' ধ্বনি তোলেন জওয়ানরা। গত ১৩ এপ্রিল‘অপারেশন মেঘদূতে’র ৪০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ১৯৮৪ সালের এই দিনেই সামরিক অভিযানের মাধ্যমেই পাকিস্তানের হাত থেকে সিয়াচেন হিমবাহে ঐতিহাসিক জয়লাভ করেছিলেন ভারতীয় জওয়ানরা।