আকাশ মিশ্র: পরিচালক নীরজ পাণ্ডে মানেই ছবি জুড়ে একটা কী হবে, কী হবে ভাব! টুইস্ট তো নীরজের বা হাতে খেলা। ঠিক যেমন, 'আ ওয়েডনেস ডে', 'স্পেশাল ২৬', এবং 'বেবি' ছবির পরতে পরতে মারকাটারি অ্যাকশন, সঙ্গে টানটান স্ক্রিপ্ট। তবে নীরজ শুধু ছবি নয়, সিরিজেও এমনই গল্প বলার চেষ্টা করেন। তার প্রমাণ 'স্পেশাল অপস' এবং 'খাঁকি'। ওটিটিতে সদ্য মুক্তি 'সিকন্দর কা মুকদ্দর' দেখার কারণ কিন্তু সেই নীরজই। যাঁরা থ্রিলার ছবি দেখতে পছন্দ করেন, বলা ভালো যাঁরা নীরজের গল্প বলার ধরনের ভক্ত, তাঁদের কিন্তু আশাহত করবে এই ছবি। কেননা, এই ছবিতে নীরজের স্টাইলই একেবারে গায়েব।
গল্পটা একটু ছুঁয়ে নেওয়া যাক। ২০০৯ সালের প্রেক্ষাপটেই তৈরি হয়েছে 'সিকন্দর কা মুকদ্দর'। ছবি শুরুই হয়, এক ডাকাতির ঘটনা থেকে। যেখানে চুরি যায় ৬০ কোটি টাকা মূল্যের রত্ন। পুলিশ অফিসার জসবিন্দর সিং (জিমি শেরগিল) ঝটপট করে সন্দেহভাজনের তালিকা তৈরি করে ফেলেন, সেই তালিকা থাকেন মঙ্গেশ দেশাই (রাজীব মেহতা), কামিনী সিং (তামান্না ভাটিয়া) এবং সিকন্দর শর্মা (অবিনাশ তিওয়ারি)। মূলত এই তিন চরিত্রের অ্যালিবাই এবং পুলিশের ফন্দিকে কেন্দ্র করেই গল্প এগোতে থাকে।
নীরজের এই ছবির শুরুটা বেশ ভালো। তবে ক্লাইম্যাক্স খুবই দুর্বল। বলা ভালো শুরুর দিকটা বেশ ভালোই টানটান। তবে ছবি একটু এগিয়ে গেলেই দুর্বল হতে শুরু করে। থ্রিলার ছবিতে গল্প বলার ভঙ্গি যদি স্লথ হয়ে পড়ে, তাহলেই গণ্ডগোল। আসল মেজাজটাই হারিয়ে ফেলে। নীরজের এই ছবির ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারটা ঘটে যায়। ছবির শুরুর দিকে যে সাসপেন্স তৈরি হয়, তা ছবি এগোলেই একঘেয়ে হয়ে যায়। এমনকী, আগে থেকে প্লট কোন দিকে এগোবে, তার আঁচ পাওয়া যেতে থাকে।
অভিনয়ের দিক থেকে সবাই নিজের জায়গায় একশো শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তবে আলাদা করে নজর কেড়েছেন জিমি শেরগিল। .তামান্না ভাটিয়ার অভিনয়ে তেমন নতুনত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। অবিনাশ তিওয়ারিও যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন।
শেষমেশ বলতে হয়, নীরজ পাণ্ডের এই ছবি টাইমপাস ছাড়া আর কিছুই নয়। যাঁরা নীরজের থ্রিলার ছবির ফ্যান তাঁরা যদি 'স্পেশাল ২৬', 'আ ওয়েডনেস ডে'র কথা মাথায় রেখে এই সিনেমা দেখতে বসেন, তাহলে আশাহত হবেন।