সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: পুজোর মুখে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য সুখবর। পাহাড় পর্যটনের শুধু দার্জিলিং, কালিম্পংই নয়, এবারের পুজোয় চলে যেতেই পারেন উত্তর-পূর্বের অতি জনপ্রিয় ছোট্ট পাহাড়ি রাজ্য সিকিমে (Sikkim)। শনিবার থেকেই বাইরের পর্যটকদের জন্য দুয়ার পুরোপুরি উন্মুক্ত করল সিকিম। প্রায় সাত মাস পর এদিনই দিল্লি থেকে ৭ পর্যটকের পা পড়ল সেখানে। আগামী ১০দিন সিকিমের সমস্ত লজ, হোটেল একেবারে ‘হাউসফুল’। বিমানবন্দরে তাঁদের ঐতিহ্যবাহী খাদা পরিয়ে বরণ করে নিলেন সিকিমের পর্যটন বিভাগের কর্মীরা। এতদিন পর ফের লক্ষ্মীলাভের আশা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
দেশজুড়ে করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তেই মার্চ মাস থেকে বন্ধ হয়ে যায় সমস্ত পর্যটনস্থল। সিকিমও তার ব্যতিক্রম ছিল না। অতি সতর্ক এই পাহাড়ি রাজ্যের চারপাশের সীমানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এই কঠোর বিধি মেনেই জুন মাস পর্যন্ত এই রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বিশেষ ছড়ায়নি। এরপর আনলক পর্বে সপ্তাহখানেকের জন্য পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় সিকিম। অনেকে বেড়াতে চলেও যান। কিন্তু দেখা যায়, তারপর থেকেই হু হু করে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে চলে। ফলে বাধ্য হয়ে ফের কঠোর বিধিনিষেধের পথে হাঁটে সিকিম প্রশাসন। ফের বজ্র আঁটুনির মধ্যে ঢুকে পড়ে সিকিম। সিল করে দেওয়া হয় বাংলা-সিকিম সীমানাও।
[আরও পড়ুন: পুজোয় এবার ‘হাউসফুল’ দিঘা, মন্দারমণি! বেনজির ভিড়ের সাক্ষী হবে সৈকত শহর]
এরপর আগস্ট মাত্র ২ দিনের জন্য ফের সিকিমের দরজা খুললেও সংক্রমণের আশঙ্কা আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পণ্যই ভিনরাজ্য থেকে সিকিমে আনানেওয়া হচ্ছিল। তবে দীর্ঘদিন পর্যটন ব্যবসা বন্ধ থাকায় ধীরে ধীরে লোকসানের অঙ্ক বাড়তে থাকে মূলত পর্যটন নির্ভর এই রাজ্যের। অন্যদিকে, প্রতিবেশী দার্জিলিংয়ে পর্যটন শুরু হওয়ায় আরও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে সিকিম। ফলে ভ্রমণস্থান খুলে দেওয়ার জন্য চাপ বাড়তে থাকে সরকারের উপর। এই অবস্থায় সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে দু’দফায় পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের সঙ্গে আলোচনায় বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেখানেই স্থির হয় চূড়ান্ত গাইডলাইন। শেষমেশ কোভিড বিধি মেনে শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হল সিকিমের দরজা। ভারত-নেপাল-ভুটান পর্যটন শিল্পের পরামর্শদাতা রাজ বসু বলেন, ”এবার ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে। আশা করা যায়, পুজোর মরশুমে এই বিপুল ক্ষতি কিছুটা পূরণ হবে।”
[আরও পড়ুন: এবার বাংলার গঙ্গাতেও ডলফিন সাফারির সুযোগ, আপনার খুব চেনা জায়গাতেই]
পর্যটন ব্যবসায়ীদের আশা, সামনেই পুজোর মরশুম। তার আগে সিকিম খুলে যাওয়ায় তাঁদের এতদিনের লোকসান কিছুটা হলেও মিটবে। অন্যদিকে, পায়ের তলায় সর্ষে দেওয়া ভ্রমণপ্রেমী বাঙালিও এই খবরে বেজায় খুশি। সামনেই পুজোর ছুটি। ব্যাগ গুছিয়ে সিকিমের পথে পাড়ি দিলেন বলে। দার্জিলিং থেকে রংপো হয়ে সোজা গ্যাংটক।