তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: এক ছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য। পরিবারের অভিযোগ, হাম ও রুবেলার টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ওই ছাত্রী। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি মহকুমার খড়িবাড়িতে। যদিও স্বাস্থদপ্তর সাফ জানিয়েছে, বাচ্চাটির অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। এমআর ভ্যাকসিন নিয়ে কারওর মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা যায়নি। টিকাকরণ চলবে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম অনন্যা সরকার (১৩)। তাঁর বাড়ি খড়িবাড়ি ব্লকের শ্যামধন জোত এলাকায়। জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ১১টা থেকে খড়িবাড়ি ব্লকের বাতাসির শ্যামধনজোত উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের হাম ও রুবেলার টিকাকরণ দেওয়া শুরু হয়। বাকি পড়ুয়াদের মতো অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী অনন্যাও ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ৩০ মিনিট স্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যবেক্ষণে ছিল। পরে সে স্কুল মাঠে খেলাধুলাও করে। পরিবার সূত্রে খবর, মিড-ডে মিল খেয়ে বাড়ি ফেরার সময় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে অনন্যা।
[আরও পড়ুন: এখনই টাকা না দিলে সময়ে কাজ শেষ হবে না, আবাসের বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্রকে জবাবি চিঠি নবান্নর]
তড়িঘড়ি প্রতিবেশীরা তাকে বাতাসি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অনন্যাকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার পর জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে তৈরি মেডিক্যাল বোর্ড ওই ছাত্রীটির চিকিৎসা শুরু করে। কিন্তু বিকেল পাঁচটা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। ভ্যাকসিনের প্রভাব নাকি অন্য কোনো কারণে ওই ছাত্রীটির মৃত্যু হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা। ছাত্রীর এক প্রতিবেশি অজয় সরকার বলেন, “আমাদের মেয়েটি ভালভাবেই স্কুলে গিয়েছিল। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল তা বুঝতে পারছি না। এক্ষেত্রে কার গাফিলতি রয়েছে তা খুঁজে দেখা উচিত।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, “বাচ্চাটির অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এমআর ভ্যাকসিন নিয়ে কারওর মৃত্যু হয়েছে, শোনা যায়নি। টিকাকরণ চলবে।” দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তুলসী প্রামানিক বলেন, “ওই ছাত্রীটি ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাঁকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মেডিক্যাল বোর্ড বসিয়েও শেষপর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তবে, মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।” শ্যামধনজোত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন দাস বলেন, “ওই ছাত্রীটি বাড়ি ফেরার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আমরা খবর পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্যে তাকে বাতাসি হাসপাতালে পাঠাই।”