দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের (WB Panchayet Election) দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগেই হুগলির সিঙ্গুর, হরিপালে পঞ্চায়েতের প্রার্থী তালিকা তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল ব্যালটের (Ballot) মাধ্যমে। প্রার্থী তালিকা তৈরিতে পঞ্চায়েতের সমস্ত বুথের সক্রিয় সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে এভাবে ব্যালটের মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া শাসকদলের এক অনন্য নজির নিঃসন্দেহে। ঠিক যেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পদ্ধতি!
২০২৩-এ পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাতে দলের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে মানুষের কাছে তাদের ঊজ্জ্বল ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্যই এই প্রক্রিয়া নিঃসন্দেহে বিরোধীদের চিন্তা বাড়াবে। পাশাপাশি শনিবার রীতিমতো ভোট দেওয়ার মেজাজে বুথ সদস্যদের মধ্যে রীতিমতো উৎসাহ ছিল দেখার মতো। সিঙ্গুর (Singur) বিধানসভায় ১৬ টি পঞ্চায়েত ও হরিপাল বিধানসভায় মোট ১৫ টি পঞ্চায়েত রয়েছে। মোট ৩১ টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রার্থী তালিকা তৈরির জন্য সম্প্রতি মন্ত্রী বেচারাম মান্নার উপস্থিতিতে স্থানীয় নেতৃত্বদের নিয়ে এক বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই প্রার্থী তালিকা তৈরীর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি হয়। বৈঠকে ঠিক হয়, মানুষের সঙ্গে যাঁদের যোগাযোগ বেশি রয়েছে, যাঁদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ তাঁদের পঞ্চায়েতে প্রার্থী করার জন্য সদস্যরা ব্যালটের মাধ্যমে পছন্দের ক্রমানুসারে ৩ জন প্রার্থীর নাম লিখে নির্দিষ্ট বক্সে জমা দেবেন।
[আরও পড়ুন: নেতাজির জন্মদিনে শহিদ মিনারে বিশেষ সমাবেশ সংঘের, কলকাতায় আসছেন মোহন ভাগবত]
সেইমতো সিঙ্গুরের ১৬টি পঞ্চায়েতে ২৭৮ টি বুথে শনিবার সমস্ত বুথ সদস্যদের ক্রমানুসারে ১,২,৩ লেখা স্লিপ দেওয়া হয়। এই স্লিপে প্রত্যেক সদস্য তাদের তিনজন পছন্দের প্রার্থীর (Candidate selection) নাম লেখার পর তা বক্সে জমা দেন। এদিন প্রার্থী তালিকা তৈরির জন্য রীতিমতো লম্বা লাইন পড়ে যায়। লাইন দেখে মনে হয় ভোটের আগেই যেন ভোট উৎসবে মেতে উঠেছে সিঙ্গুর। বিভিন্ন বুথে গত চারদিন ধরে বৈঠক করার পর শনিবার প্রার্থী তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ হল।
সূত্রের খবর, এই তালিকা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে সমস্ত কিছু যাচাই করে খতিয়ে দেখার পর পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। সিঙ্গুর ব্লক তৃণমূল (TMC) সভাপতি গোবিন্দ ধারা জানান, এই পছন্দের তালিকায় যাঁকে মানুষ বেশি চাইছেন, তাঁকে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি তার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা খতিয়ে দেখে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। গোবিন্দবাবুর আশা, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে এটা মানুষের কাছে ভাল বার্তা নিয়ে যাবে।
[আরও পড়ুন: ইমাম ভাতা দ্বিগুণ বিজেপি শাসিত হরিয়ানায়, মুখ্যমন্ত্রী খট্টরকে সংবর্ধনা ওয়াকফ বোর্ডের]
অন্যদিকে হরিপাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস পাঠক জানান, তাঁদের ১৫টি পঞ্চায়েতে ২৪৯ টি বুথের প্রার্থী তালিকা তৈরির জন্য বিভিন্ন বুথে বুথে বৈঠক শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরি করে উর্ধতন নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অন্যদিকে শনিবার কামারকুন্ডুতে দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচী নিয়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও বিধায়ক করবী মান্না সাংবাদিক সম্মেলন করেন। মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ”পঞ্চায়েত নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। বিরোধীরা অনেক কুৎসা করছে, কিন্তু তারা সিপিএমের অতীতকে টেনে আনতে চান না। সমস্ত দলই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের মনোনয়ন জমা দিতে পারবে।”