বিক্রম রায়, কোচবিহার: নির্বাচন মানেই এখানে মৃত্যুভয়। ভোট দিতে যাওয়া মানেই গুলি খাওয়ার আতঙ্ক। দু’বছর আগের বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর (central force) গুলিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়। কোচবিহারের শীতলকুচিতে (Sitalkuchi) তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিনও সেই ভয় তাড়া করে বেড়াচ্ছে। জোড়পাটকির ১২৬ নং বুথে এবারও থাকছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই আতঙ্কও স্বাভাবিক।
কেন রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগের দিন শীতলকুচিতে আলাদা নজর? তা বুঝতে গেলে একটু রাজ্যের নির্বাচনী ইতিহাসের পাতা ওলটাতে হবে। ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল, রাজ্যে বিধানসভা ভোটের চতুর্থ দফা ভোটের দিন কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের জোড়পাটকির ১২৬ নং বুথে ঘটে গিয়েছিল অপ্রত্যাশিত ঘটনা। বুথের বাইরে জমায়েত হঠাতে গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। তাতে মৃত্যু হয় ৪ জনের। এ নিয়ে তোলপাড় হয়ে ওঠে ভোটের বঙ্গ। সেখানে ফের ভোটগ্রহণের দাবি ওঠে। গোটা ঘটনা এতটা স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে যাতে সবদিক খতিয়ে দেখে তবেই সেখানে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানায় নির্বাচন কমিশন। তার জন্য সবরকম তথ্যপ্রমাণ ভালভাবে খতিয়ে দেখা হয়। সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক, নির্বাচনী আধিকারিকদের থেকে রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দপ্তর থেকেও রিপোর্ট চাওয়া হয়। পরে সেখানে পুনর্নির্বাচনও হয়।
[আরও পড়ুন: একটানা ২১ বছর, এবারও ভোটে উত্তাপহীন ‘ভোটারশূন্য’ বাঁশগড়]
স্বাভাবিকভাবে এবার পঞ্চায়েত ভোটেও জোড়পাটকির এই বুথ স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত। মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জওয়ান। শুক্রবার সন্ধেবেলাতেই তাঁরা ভোটকর্মীদের সঙ্গে বুথে পৌঁছে গিয়েছেন। এবার তাঁরা কতটা ‘অতিসক্রিয়’ হয়ে উঠবে? তা ভেবে বুথমুখী হতেই কুঁকড়ে যাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তৃণমূলের তরফে অবশ্য জওয়ানদের হাতে নিহত গ্রামবাসীদের শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর কর্মসূচি রয়েছে ভোট শুরুর আগে। কিন্তু তাতে কি ভরসা ফিরবে?