দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: মাথা কুটেও বুথে লোক জোগাড় করা যাচ্ছে না। কোথাও কুড়িয়ে-বাড়িয়ে জোটানো গিয়েছে বড়জোর চার জনকে। কোথাও সাকুল্যে জনা পাঁচেক। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসে হুগলির (Hooghly) শ্রীরামপুরে ন্যূনতম ৩০ জনকে নিয়ে বুথ কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। যা শুনে রাতের ঘুম ছুটেছে জেলা বিজেপি (BJP) নেতৃত্বের।
আগামী এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে যে কোনও দিন পঞ্চায়েত ভোটের (WB Panchayet Election) দিন ঘোষণা করতে পারে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তার আগে জেলায় ধসে পড়া সংগঠনের ছবি চিন্তা বাড়িয়েছে রাজ্য বিজেপির। বুধবার রাতে হুগলির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলায় স্মৃতি ইরানির বৈঠকে সেই অসহায়তার ছবি ফিরে এল আরেকবার। এদিন চণ্ডীতলার বরিজহাটিতে শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ইরানি (Smriti Irani)।
[আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে জাকির হোসেনকে তলব আয়কর দপ্তরের, ‘সব হিসাব দেব’, আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল বিধায়ক]
দলীয় সূত্রে খবর, রুদ্ধদ্বার বৈঠকে স্মৃতি ইরানি নির্দেশ দিয়েছেন, যে ভাবেই হোক দ্রুত জেলার প্রতি বুথে ন্যূনতম ৩০ জনের বুথ কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩০ জনের বেশি হলেও আপত্তি নেই। নেত্রীর নির্দেশে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের কপালে। জেলা বিজেপির এক নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার বহু বুথ কমিটিতে সদস্য সংখ্যা সাকুল্যে চার থেকে পাঁচ জন। সেই চার-পাঁচ জনের কমিটি রাতারাতি কি ৩০ জনের কমিটিতে পরিণত করা সম্ভব?’’ জানা যাচ্ছে, শক্তিশালী বুথ কমিটির সঙ্গে দলের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর উপরও জোর দিয়েছেন স্মৃতি। নির্দেশমতো কাজ কতটা এগোল, তা দেখতে খুব শীঘ্রই আবার হুগলিতে আসবেন স্মৃতি, জানাচ্ছে জেলা বিজেপির ওই সূত্র।
[আরও পড়ুন: বছরের শুরুতেই ফের ছাঁটাই, চাকরি গেল ২০০ Ola কর্মীর]
জেলা বিজেপি নেতারা ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে রাজ্যের শাসকদল ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচি নিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলি নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তারা পৌঁছচ্ছে। এর প্রভাব পঞ্চায়েতে পড়বে। সেখানে বিজেপি রাজ্য নেতারা নিজেদের স্বার্থ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও দলে আধিপত্য বিস্তারে ব্যস্ত। দিল্লির নেতারা বাংলার মাটি চেনেন না। ভাষাগত সমস্যায় মতের আদানপ্রদানও করতে পারেন না। ফলে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া কতটা সম্ভব? শ্রীরামপুর (Serampore) জেলা বিজেপি সূত্রে খবর, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের সাধারণ মানুষের জন্য গৃহীত প্রকল্পগুলি হ্যান্ডবিলের আকারে ছাপার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই হ্যান্ডবিল গ্রামে গ্রামে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।