সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: গুজরাট থেকে গাঁয়ে পা রাখলেও ঘরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। গ্রামবাসীদের বাধায় ১২ জন পরিযায়ী শ্রমিকের কোয়ারেন্টাইনের ঠিকানা খোলা মাঠ। জৈষ্ঠের প্রবল দাবদাহে সেখানেই কাটছে তাঁদের দিনরাত। পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ব্লকের চিরুডি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাহাদুরপুর ও চিরুডি গ্রাম থেকে প্রায় এক কিমি দূরে খোলা মাঠে ত্রিপল টাঙিয়ে গ্রাম থেকে আলাদা হয়ে রয়েছেন তাঁরা। পরিবারের লোকজন তাদেরকে খাবার ও পানীয় জল এনে দিলেও হাত–পা ধোওয়া বা স্নানের জল মিলছে না। ফলে সমস্যায় পড়েছেন প্রত্যেকেই।
গুজরাটের ভাদোদোরা জেলার বাজোয়া থানা এলাকায় একটি গ্যাস কারখানায় কাজ করতেন বাহাদুরপুরের এগারো ও চিরুডির একজন-সহ বারো জন পরিযায়ী। দীর্ঘ লকডাউনে সেখানে আটকে পড়েন তাঁরা। সেভাবে খাবার পাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। তবুও কোনভাবে সেখানেই দিন কাটাচ্ছিলেন। পরিযায়ীদের আসার অনুমতি মিলতেই তাঁরা ৯৫ হাজার টাকায় একটি মিনিবাস ভাড়া করে সেখান থেকে রওনা দেন।
গত শনিবার ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বান্দোয়ানের ধবনী নাকা পয়েন্টে পৌঁছনো মাত্রই পুলিশ তাঁদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে। স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয় তাঁদের। সেখানে তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাঁদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
[আরও পড়ুন: ছাদ নেই মাথার উপর! আমফানের তাণ্ডব দেখে স্তম্ভিত অন্ধ্রপ্রদেশ ফেরত পরিযায়ীরা]
কিন্তু গ্রামবাসীদের বাধায় তাঁরা ঘরেই ঢুকতে পারেননি। ফলে খোলা মাঠেই তাঁরা আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। ওই শ্রমিকদের মধ্যে জয়দেব মণ্ডল, সত্য মণ্ডল, সরোজ মণ্ডল বলেন, “আর যে কত ঝামেলা পোহাতে হবে কে জানে! পেটের টানে ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়াটাই যেন অপরাধ হয়ে গিয়েছে। এখানে কাজ নেই বলেই পরিবার-পরিজনদের কথা ভেবে বাইরে যেতে বাধ্য হই।” তবে বান্দোয়ানের বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, “ওই শ্রমিকদের আমরা অন্যত্র সরিয়ে দিচ্ছি। গ্রামের একপাশে আগে একটি আশ্রম স্কুল ছিল সেখানে ওই শ্রমিকদের রাখা হবে।”
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বিধি না মেনে আমফান বিপর্যস্তদের সঙ্গে দেখা! পুলিশি ‘হেনস্তা’র শিকার শান্তনু ঠাকুর]
The post করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা, খোলা মাঠে আশ্রয় গুজরাট ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের appeared first on Sangbad Pratidin.