শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: ঘর আছে। সংসার আছে। তবু্ও ঘরে ঢুকতে পারলেন না ওঁরা। ওঁদের আশ্রয় হল না কোনও সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। গ্রামবাসীদের সিদ্ধান্তে ওঁদের আশ্রয় হল গ্রাম থেকে একটু দূরে জনমানবহীন আমবাগানে তাবুর নিচে।
ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের শ্রীরামপুরের হাজিপাড়ার ২০ জন শ্রমিক ওড়িশায় রেলের নির্মাণ কর্মী হিসাবে কাজ করতেন। লকডাউনের ফলে কাজ বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েন। অবশেষে অনেক কষ্ট করে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বাস ভাড়া করে দিনছয়েক আগে তাঁরা ফরাক্কায় ফিরে আসেন। পরিযায়ী শ্রমিক হওয়ায় গ্রামবাসীরা করোনা আতঙ্কে শ্রমিকদের বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেন। গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের আমবাগানে তাঁবু খাটিয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। গ্রামবাসীদের সিদ্ধান্তকে মাথা পেতে নিয়ে আমবাগানে আশ্রয় নিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় যুবক শাহাজাদ শেখ জানান, বাইরে থেকে শ্রমিকরা হঠাৎ করে গ্রামে ফিরে এসে সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করে ফেলবে তা নিয়ে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের বাঁচাতে গ্রামের পশ্চিমে আমবাগানে তাঁবু খাটিয়ে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের খাওয়া, জল এমনকি গ্রামেরই চিকিৎসক দিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মরদেহ গ্রামে এলেও মিলল না স্নেহের পরশ, করোনা আতঙ্কে দূরেই রইলেন পরিজনরা]
লকডাউনের মধ্যে অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে ওড়িশা থেকে বাড়ি ফিরে এসেও গ্রামবাসীদের বিধানকে মেনে নিয়ে গাছের নীচে দিন কাটাছেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর হাজিপাড়ার ২০ জন পরিযায়ী শ্রমিক। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। যদিও ফরাক্কার বিডিও রাজর্ষি চক্রবর্তী জানান, বিষয়টি জানা ছিল না। দ্রুত খোঁজ নিয়ে দেখছি। গ্রামবাসীরা এভাবে কাউকে রাখতে পারেন না। বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের নজরে আনা উচিত ছিল গ্রামবাসীদের।
দেখুন ভিডিও:
[আরও পড়ুন: বাংলায় ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে ঘূর্ণিঝড় আমফান, মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার]
The post ওড়িশা থেকে কষ্ট করে ঘরে ফেরাই সার, বাড়ির পরিবর্তে আমবাগানে ঠাঁই পরিযায়ী শ্রমিকদের appeared first on Sangbad Pratidin.