বাবুল হক, মালদহ: মালদহের (Malda) ভূতনিতে এবার বাঁধ ভাঙল গঙ্গার। গভীর রাত থেকে হু হু করে গঙ্গার জল ঢুকতে শুরু করেছে মানিকচকের ভূতনির চরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ভূতনি চরের বাসিন্দাদের মধ্যে। ঘুরেফিরে একটাই প্রশ্ন উঠছে, গঙ্গা আর ফুলহার মিশে গিয়ে কি গোটা ভূতনি চরটাই মুছে ফেলবে? বিপন্ন হতে পারে লক্ষাধিক মানুষ। এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত বারোটা নাগাদ কেশরপুর শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় ভূতনি সার্কিট বাঁধের প্রায় ৭০ মিটার অংশ গঙ্গার (River Ganges) জলের তোড়ে ভেঙে যায়। এর ফলে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে ভূতনি চরে। এলাকার মানুষজন ছুটে এলেও বাঁধ রক্ষার জন্য কিছুই করতে পারেননি। দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া তাঁদের কোনও উপায় ছিল না। শুক্রবার সকালেও একই গতিতে জল ঢুকছে চরে। সেই সঙ্গে গঙ্গার জলস্ফীতি আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিন সকাল পর্যন্ত সেচ দপ্তরের কর্মীরা অকূস্থলে পৌঁছননি। আতঙ্কে অনেকেই ভূতনি ছেড়ে পালাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: Weather Update: দক্ষিণবঙ্গবাসীর জন্য সুখবর, রবিবার থেকেই দেখা মিলতে পারে রোদের]
চরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সপ্তাহ তিনেক আগেই ভূতনি চরে কোশি ঘাটের কাছে নদী ভাঙন ঠেকাতে প্রস্তাবিত বাঁধ নির্মাণের কাজের শুভ সূচনা করে গিয়েছেন রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। সোয়া কোটি টাকা বরাদ্দ করে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করায় মালদহ জেলা সেচ দপ্তর। বালির বস্তা ফেলে দায়সারাভাবে নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছিল বলে বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। গঙ্গার জলের তোড়ে ভেঙে গেল সার্কিট বাঁধের প্রায় ৭০ মিটার দীর্ঘ অংশ। জলেই গেল সোয়া কোটি বলে অভিযোগ।
মালদহের মানিকচক ব্লকের ভুতনি চরে গঙ্গা নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়েই চলছে পাড়ের ভাঙন। উত্তর চন্ডীপুর অঞ্চলের কোশিঘাট এলাকায় বাঁধ ভেঙে গিয়ে গঙ্গার জল ঢোকায় আরও একটি আশঙ্কা দানা বাঁধছে, গঙ্গা এবং ফুলহার, এই দুই নদী মিশে যাবে না তো? এখন দুই নদীর ব্যবধান মাত এক হাজার মিটারের কম। তাহলে কি মুছে যাবে ভূতনি চর? সেচ দপ্তরের একটি সূত্রের দাবি, ভেঙে যাওয়া সার্কিট বাঁধের আধ কিলোমিটার পিছন দিকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রিং বাঁধ সংস্কার করা হচ্ছে। ফলে এখনও গ্রামে জল ঢোকেনি। ভূতনি চরের একপাশে গঙ্গা, আর এক পাশে বইছে ফুলহার। তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে এই চরে। কয়েক লক্ষ মানুষের বাস। গঙ্গা-ফুলহার কাছাকাছি চলে আসায় ঘুম উড়ে গিয়েছে বাসিন্দাদের। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, “পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে। মানুষকে সতর্ক করতে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।”