সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স ৯২ বছর। সোজা হয়ে দাঁড়াতেো কষ্ট হয়। সেই অশক্ত শরীরেই দু’পকেটে পিস্তল ও রিভলভার পুরে সোজা চলে এলেন ছেলের শোওয়ার ঘরে। একবার নয়, পরপর দু’বার গুলি চালিয়ে হত্যা করলেন নিজের সন্তানকেই। ঘটনাটি ঘটেছে আমেরিকার অ্যারিজোনায়।
ঘাতক ও মৃতের মধ্যে সম্পর্ক মা-ছেলের। মায়ের বয়স ৯২ বছর। ছেলের ৭২। এই ঘটনার পিছনে কোনও অবৈধ সম্পর্ক বা সম্পত্তিগত বিবাদ নেই। বরং কিছুটা হলেও নিরাপত্তার অভাব ও অসম্মানের গ্লানি জড়িয়ে রয়েছে বলে মনোবিদদের দাবি।
[ ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক অবনতিতে দায়ী মোদির ঔদ্ধত্য, দুষলেন ইমরান ]
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহে। বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্ব আর পালন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছিলেন ৭২ বছর বয়সি ব্লেসিং। তাই মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। ছেলের এই সিদ্ধান্তই মেনে নিতে পারেননি আন্না মায়ে ব্লেসিং। তিন-চারদিন একা ঘরে বসে বারবারই ভেবেছেন, আর অপমানের জ্বালায় জ্বলেছেন। সেই সঙ্গে রাগে-অভিমানে অন্ধ হয়ে ছেলেকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন। সোমবার সকালে, দু’পকেটে দু’টো মারণাস্ত্র নিয়ে চলে আসেন ছেলের শোবার ঘরে। তখন সেখানে ছিলেন ছেলে ও তাঁর বান্ধবী। তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছেলেকে লক্ষ্য করে গুলি চালান বৃদ্ধা। প্রথম গুলিটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাথরুমের আয়নায় লাগলেও পরের দু’বার আর ভুল হয়নি। একটি গুলি ছেলের গলায় ও একটি চোয়াল ভেদ করে চলে যায়। ৭২ বছরের ব্লেসিং মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বৃদ্ধা নিচু হয়ে ছেলের মৃত্যু নিশ্চিত কি না পরীক্ষা করে দেখেন। এরপরেই পিস্তল তোলেন ছেলের বান্ধবীর দিকে।
[ প্রত্যাবাসনে বাধা রোহিঙ্গা নেতারাই, ডামাডোলে বিপাকে স্থানীয়রা ]
ঘটনার সময় খাটের আড়ালে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করলেও এই সময় তিনিই বৃদ্ধাকে ধাক্কা দেন। আচমকা ধাক্কা সামলাতে না পেরে তাঁর হাত থেকে পিস্তলগুলি পড়ে যায়। তারপরই বৃদ্ধা নিজের ঘরে ফিরে আসেন। পরে ব্লেসিংয়ের বান্ধবী ৯১১ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে বৃদ্ধাকে গ্রেপ্তার করে। নিজের ঘরে ফিরে আত্মহত্যা করার কথা ভাবলেও তাঁর কাছে আর পিস্তল না থাকায় তা করতে পারেননি বলে পুলিশকে জানিয়েছেন বৃদ্ধা আন্না মায়ে। তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তরে ঘুমোতে চান বলেও তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ১৯৭০ সালে নিজেই কিনেছিলেন রিভলভারটি। অন্য ০.২৫ ক্যালিবার পিস্তলটি তাঁকে তাঁর স্বামী উপহার দিয়েছিলেন। যদিও দু’টির একটিও এর আগে ব্যবহার করা হয়নি। এবং এর আগে বন্দুক চালানোর কোনও অভিজ্ঞতাও তাঁর ছিল না বলে জানিয়েছেন বৃদ্ধা। পুলিশের খাতায় তাঁর নামে এর আগে কোনও অপরাধের তথ্য নেই। মার্কিন মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, এই ঘটনা ফের আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের একাকিত্ব সংক্রান্ত সামাজিক ও মানসিক সমস্যাগুলি।